সৌদি থেকে ‘অবৈধ’ বাংলাদেশিরা দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন

সৌদি আরবে কর্মরত কাগজপত্রহীন ‘অবৈধ’ বাংলাদেশি শ্রমিকরা দেশে ফিরে আসার সুযোগ পাবেন।

তবে কর্মস্থল থেকে পলাতক, গৃহকর্মী বা চালকরা এই সুযোগ নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

উদ্যোগের অংশ হিসেবে, কাজের অনুমতি শেষ হয়ে যাওয়া প্রবাসীদের সৌদি ছেড়ে আসার ভিসা নিতে সেদেশের শ্রম আদালতে আবেদন করতে হবে।

কর্মকর্তারা জানান, আবেদনটি রিয়াদে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।

জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের শ্রম কল্যাণ শাখায় শ্রমিকদের আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ মিশন থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভিসা পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের দেশে ফিরতে হবে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রিয়াদে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে দেওয়া আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে তারা কোনো ফি ছাড়াই এই সুযোগ নিতে পারবেন।

সৌদি কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ মিশন নোটিশটি জারি করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্যান্য দেশ থেকেও শ্রমিকরা দেশে ফিরে আসার সুযোগ পাবেন।

রিয়াদ শ্রমিক কল্যাণ শাখার মুখ্য সচিব মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান জানান, তারা ২২ ডিসেম্বর থেকে আবেদনপত্র পাচ্ছেন।

তিনি এই প্রতিবেদককে ফোনে বলেন, “পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলবে।”

প্রায় এক হাজার কর্মী এই সুযোগ নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

গত বছরজুড়ে, সৌদি আরব কয়েক হাজার অননুমোদিত বাংলাদেশি শ্রমিককে আটক করে ফেরত পাঠায়।

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় ২২ হাজার শ্রমিককে উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

তাদের অনেকের কাছে অনুমতি ছিল না, যা স্থানীয়ভাবে ‘আকামা’ নামে পরিচিত।

রিয়াদে বাংলাদেশ মিশনের ফেসবুক পেজেও নোটিশটি পোস্ট করা হয়েছে।

খন্দকার ফয়সাল নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন যে, তিনি পাঁচ মাস ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন তবে এখনও আকামা পাননি। তিনি লিখেছেন, “আমি দাম্মাম আল জুবাইলে থাকি এবং আমার কফিল (যিনি কাজ দেবেন) কোথায় তা আমি জানি না।”

ফয়সালও দেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

নাম প্রকাশ না করে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, একজন অভিবাসী শ্রমিক যখন আকামা নিতে ব্যর্থ হন তখন তারা অবৈধ হিসেবে গণ্য হন এবং শাস্তির মুখে পড়ার ঝুঁকিতে থাকেন।

তিনি বলেন, বিদেশি কর্মীদের জন্য আকামার ব্যবস্থা করা এবং প্রতিবছর এটি নবায়ন করা সৌদি নিয়োগকারীদের দায়িত্ব। নিয়োগকর্তাকে আকামার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে ফি বাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, তবে পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তারা এই অর্থ দিতে বা তাদের কর্মীদের আকামাকে নবায়ন করতে চান না। এমন পরিস্থিতিতে নিয়োগকর্তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা সৌদি কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।

তিনি জানান, সেখানে এমন কর্মীরাও রয়েছেন যাদের আকামার মেয়াদ মাস খানেক আগে শেষ হয়েছে। তবে, তারা কোনোমতে সেখানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের দেশে ফেরার জন্য প্রত্যাবাসন উদ্যোগ সহজ বিকল্প হবে।

দেশে ফিরে আসার পর তারা ভিসা নিয়ে আবার যেতে পারবেন।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সৌদি আরবে প্রায় ২০ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত।

ফোনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, মন্ত্রণালয় প্রত্যাবাসন উদ্যোগের বিষয়ে অবগত রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women retain SAFF glory

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

14m ago