ছাত্রলীগকে দেশবাসীর আস্থা অর্জন করতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

নীতি ও আদর্শ নিয়ে চলার মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের পাশাপাশি ছাত্রলীগকে একটি মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নীতি ও আদর্শ নিয়ে চলার মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের পাশাপাশি ছাত্রলীগকে একটি মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা এর সকল নেতা-কর্মীকে মনে রাখতে হবে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলা, ঐতিহাসিক ৬ দফা, ১১ দফা এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলা এবং সর্বোপরি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে তাদের আচার-আচরণ, তাদের কথা-বার্তা, তাদের রাজনীতি-সবকিছু সেইভাবেই করা উচিত। যেন এই সংগঠনটা মর্যাদাপূর্ণ হয় এবং দেশ ও জাতির কাছে যেন তারা একটা আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করে চলতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির যে কোন ক্রান্তিলগ্নে ছাত্রলীগ সবসময় বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছে। আমার বাবা-যখন জেলে থাকতেন তখন ছাত্রলীগ যোগাযোগ রাখতো আমার মায়ের সঙ্গে এবং তিনিই সবসময় ছাত্রলীগকে নির্দেশনা দিতেন এবং সেই নির্দেশনা মোতাবেকই ছাত্রলীগ কাজ করতো।

তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে একটি সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের যে ঐতিহ্য, যে অবদান এটা প্রতিটা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর মনে রাখা উচিত।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ’৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। এ সময় সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত এবং পরে ছাত্রলীগের দলীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চারনেতা, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টের শহিদগণ এবং সকল গণঅন্দোলনে শহিদ ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠনের শহিদদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এর পরেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

ছোটবেলায় দেখা এদেশের রাজনীতির উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইয়ুব খান ‘মার্শাল ল’ দিয়ে ক্ষমতা দখল করে প্রেসিডেন্ট হলো। আগে ক্ষমতা দখল, তারপর দলগঠন এবং তারপরে ছাত্র সংগঠনের কিছু ছেলেদের হাতে অস্ত্র দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাদের একটা অবস্থান নেওয়ার অপচেষ্টা।’

তিনি বলেন, ‘তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে ’৭৫ এর জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে যখন জিয়াউর রহমান আসে তখনও দেখি তার একই চরিত্র। ঠিক আইয়ুব খানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনি মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়ে তাদের ব্যবহার করতেন একটা লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে। অবৈধভাবে দখলকরা ক্ষমতাকে বৈধ করার একটা হাতিয়ার হিসেবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, এভাবে বহু মেধাবী ছাত্রের জীবন তারা নষ্ট করেছে। যুদ্ধাপরাধী রাজাকার-আলবদরদের কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের রাজনীতি করার অধিকার দেওয়ার পাশাপাশি ৭ খুনের আসামীকেও রাজনীতি করতে দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ এমপি, দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের পক্ষ থেকে খালেদ মোহাম্মদ আলী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দলের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে পরিচয় করিয়ে দেন।

মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সারাদেশ থেকে আগত ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ এবং বিশিষ্ট নাগরিকসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago