নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ

তুমুল আলোচিত-সমালোচিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলেছেন।
abhijit-banerjee-1.jpg
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

তুমুল আলোচিত-সমালোচিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলেছেন।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এনডিটিভিকে বলেছেন, “জনসম্পৃক্ত বা জনগণের অধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। গুরুত্ব দিয়ে ভাবা দরকার একটি সিদ্ধান্ত মানুষের জীবনে কতোটা প্রভাব ফেলতে পারে।”

তিনি বলেন, “একটা কথা বলি- যেটা আমাকে আমার মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতাজনিত জায়গা থেকে বিচলিত করছে। ধরুন একজন ব্যক্তি যিনি সিদ্ধান্ত নেবেন আপনি নাগরিকত্ব তালিকায় থাকবেন কি থাকবেন না। তিনি যদি বলেন, আমি নিশ্চিত নই আপনি একজন ভারতীয় নাগরিক কী না। তাহলে পরিস্থিতি কেমন হতে পারে! ধর্মের কথা বাদই দেন, একজন ব্যক্তির হাতে যদি ক্ষমতা থাকে, যিনি আপনার নাগরিকত্ব পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন। এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বিচলিত হওয়ার বহু কারণ রয়ে গেছে।”

“অনেকগুলি বিষয়েই আপনি বিচলিত হতে পারেন। আমি কেবল একটির কথা বললাম। আমি যদি প্রান্তিক জেলার বাসিন্দা হতাম, সীমান্ত এলাকার মানুষ হতাম, আমি এটা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়তাম। যদি কেউ এসে আমাকে বলতো, আমি নাগরিকত্ব তালিকা তৈরির দায়িত্বে আছি। আমি তোমার নাম সন্দেহভাজনদের তালিকায় রেখেছি। নাম বাদ দিতে হলে আমাকে দশ হাজার টাকা দিতে হবে। এমন কিছু ঘটবে না, তা কেউ বলতে পারবেন না। প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”, যোগ করেন তিনি।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ক্ষমতার অপব্যবহার আমাদের সমাজে খুব সাধারণ বিষয়। আমাদের রাষ্ট্রের কাঠামো নির্মাণ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। যেখানে আপনি দেশের নাগরিক না থাকলে বহু কিছু হারাবেন এবং অন্য দেশও আপনাকে গ্রহণ করবে না। ভারত রাষ্ট্র তার নাগরিকদের একটি আইনের মাধ্যমে এমন দুর্বল করে দিচ্ছেন যে, আপনি নানা দিক দিয়ে ধ্বংস হয়ে যেতে পারেন। দেশের বহু মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিচ্ছে রাষ্ট্র। রাষ্ট্র ব্যবস্থার কাঠামো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।”

নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদের মতে, “কোনো মানুষকে এতো ক্ষমতা দিয়ে সংসদ আইন প্রণয়ন করতে পারে না। বিশেষ করে যে আইন দ্বারা বহুসংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এ কারণেই বলছি, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বহু কিছু বিবেচনায় নেওয়া দরকার। তাড়াহুড়ো করে বহু কিছু বিবেচনায় না নিয়ে এমন আইন করা উচিত না।”

Comments