টেস্টকে পাঁচ দিন রাখার পক্ষেই হাশিম আমলা

নামের পাশে অনেক কীর্তি আর অর্জন। ব্যক্তিত্বের সুনামও দুনিয়াজোড়া। হাশিম আমলাকে বিবেচনা করা হয় ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে। গেল বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ব্যাটসম্যান এবারই প্রথম এসেছেন বিপিএল খেলতে। খুলনা টাইগার্সের এই ওপেনার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন দ্য ডেইলি স্টারের ক্রীড়া প্রতিবেদক মাজহার উদ্দীনকে। আলাপচারিতায় উঠে এসেছে টেস্ট ক্রিকেট, নিজের ব্যাটিং, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইত্যাদি বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে তার ভাবনা-বিশ্লেষণ।
Hashim Amla
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

নামের পাশে অনেক কীর্তি আর অর্জন। ব্যক্তিত্বের সুনামও দুনিয়াজোড়া। হাশিম আমলাকে বিবেচনা করা হয় ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে। গেল বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ব্যাটসম্যান এবারই প্রথম এসেছেন বিপিএল খেলতে। খুলনা টাইগার্সের এই ওপেনার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন দ্য ডেইলি স্টারের ক্রীড়া প্রতিবেদক মাজহার উদ্দীনকে। আলাপচারিতায় উঠে এসেছে টেস্ট ক্রিকেট, নিজের ব্যাটিং, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইত্যাদি বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে তার ভাবনা-বিশ্লেষণ।

দ্য ডেইলি স্টার: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া কি কঠিন ছিল?

আমলা: (২০১৯ সালের) বিশ্বকাপের পর আমি বিষয়টা নিয়ে বেশ ভেবেছি। সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। ১৫ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি। সবকিছু যেভাবে ঘটেছে, তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আলহামদুলিল্লাহ, সবকিছু ভালো গিয়েছে। এটা কোনো কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল না। আমার মনে হয়েছে, এটাই সঠিক সময়। আমি সবসময় সেরা উপায়ে ক্রিকেট খেলতে চেয়েছি। মাঠে ও অনুশীলনে নিজের সেরাটা দিতে চেয়েছি। আমি যা পেয়েছি তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।

দ্য ডেইলি স্টার: ওয়ানডেতে দ্রুততম ২০০০ থেকে দ্রুততম ৭০০০ রান- সবগুলো কীর্তিই আপনার গড়া। ২৭তম ওয়ানডে সেঞ্চুরিতেও আপনি দ্রুততম। একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরির মালিক আপনি। কখনো কি মনে হয়েছে, হাতে সময় কম, যা করার দ্রুত করতে হবে?

আমলা: না না...(হাসি)। যখন এ ধরনের কোনো মাইলফলক গড়ে ফেলি, সেটা আমার জানা থাকে না। আপনারাই পরে আমাকে এসব বলে দেন। ক্রিকেট খেলাটা আমার জন্য কখনোই ওইসব বিষয় নিয়ে ছিল না। কারণ এটা আমার ভাবনাকে এলোমেলো করে দিতে পারে। সময় নেই বা এমন কিছু কখনো মনে হয়নি।... আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে রান করা আমি উপভোগ করেছি।

দ্য ডেইলি স্টার: টেস্ট ক্রিকেট পাঁচ দিন থেকে চার দিনে নামিয়ে আনার কথা-বার্তা চলছে। আপনার মতামত কি?

আমলা: যদি আমি এটার নিয়ন্ত্রণে থাকতাম, তাহলে আমি অবশ্যই টেস্টকে পাঁচ দিনে রাখতাম। এটা নিয়ে আমি খুব বেশি কিছু ভাবিনি কারণ এসব নিয়ে আইসিসির কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তিই সবার অগোচরে সব কিছু করে থাকেন। একজন খেলোয়াড় হিসেবে বলতে গেলে, আমি এটা বদলাতাম না।

দ্য ডেইলি স্টার: ব্যাটসম্যান হিসেবে আপনার কিছু নিজস্ব টেকনিক ছিল। এসব কি শুরু থেকেই ছিল না-কি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পর থেকে আপনি মানিয়ে নিতে শুরু করেছেন?

আমলা: সবার টেকনিকই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নত হতে থাকে। অবশ্যই, শুরুতে যখন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতাম, তখন নিজের ব্যাটিংকে বিশ্লেষণ করতাম। এরপর আমি খেলতে থাকলাম, ভালো করলাম। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু করলাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে ধরনের বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে, তা সবসময়ই একটা উন্নতির পথ। তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা ব্যাটসম্যানদের জন্য এই বিবর্তনটা স্বাভাবিক।

দ্য ডেইলি স্টার: সর্বোচ্চ পর্যায়ে সাফল্য পাওয়ার জন্য কারও প্রতি, ধরুন বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটারের প্রতি যিনি কয়েক মৌসুম আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলেছেন কিন্তু তেমন সাফল্য পাননি, আপনার কী বার্তা থাকবে?

আমলা: উন্নতি করার অনেক পথ আছে। সাফল্য ও ব্যর্থতার সঙ্গে সঙ্গে যে বিভ্রান্তিও তৈরি হয়, সেসবের সঙ্গে লেনদেন করতে হয়। দুটোই পতন ডেকে আনতে পারে। যখন আপনি সফল হন, আপনি আত্মতুষ্টিতে ভুগতে পারেন এবং কখনো কখনো নির্ভার হয়ে যেতে পারেন। আবার যখন আপনি ব্যর্থ হন, আপনি সাহস হারিয়ে ফেলেন। এসব নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলোয়াড়রা নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজে বের করতে পারেন। এটা কেবল রান করা বা না করার বিষয় না, বরং অবিচ্ছিন্নভাবে উন্নতি করার একটা তাড়না। এসব বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার জন্য যদি আপনার একজন ভালো কোচ থাকে, তবে আপনার ক্যারিয়ারকে এটা সাহায্য করে। আমার ক্ষেত্রে এটা কাজ করেছিল। এটা এমন নয় যে, আপনাকে কেবল মৌলিক ধারায় ব্যাটিং করতে হবে। প্রত্যেক ব্যাটারেরই একটা নিজস্বতা থাকা উচিত।

দ্য ডেইলি স্টার: হাশিম আমলার কাছে শৃঙ্খলা বিষয়টা কী?

আমলা: আমি মনে করি, শৃঙ্খলার সঙ্গে ব্যবহারের একটা সম্পর্ক আছে। এটা হলো- নির্দিষ্ট সময়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটাই করা। যদি আপনার আগামীকাল খেলা থাকে, তবে রাতে আপনি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বেন। আর যদি খেলা না থাকে তাহলে রাত জেগে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন। ম্যাচ চলাকালীন ক্ষেত্রে ফোকাস ধরে রাখবেন এবং এমন কিছু করতে গিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না, যা আপনি অনুশীলন করেননি।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago