সৌম্যর ব্যাটে জিতল কুমিল্লা

soumya
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সাধারণত ওপেনিং ব্যাট করতে পছন্দ করেন সৌম্য সরকার। তবে দলের প্রয়োজনে মাঝেমধ্যেই মিডল অর্ডারে ব্যাট করে থাকেন তিনি। এদিনও নামলেন পাঁচ নম্বরে। দল তখন দারুণ চাপে। অধিনায়ক ডেভিড মালানকে নিয়ে সে চাপ তো সামাল দিয়েছেনই, শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তাতে সিলেট থান্ডারকে ৫ উইকেটে হারিয়ে নকআউট পর্বে ওঠার সম্ভাবনা আরও জোরালো করল কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। 

অথচ মাঝারি ধরণের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়ে বেশ আঁটসাঁট বোলিংয়ে শুরু করে সিলেট। বিশেষ করে নাঈম হাসান ছিলেন দুর্দান্ত। টপ অর্ডারের ৩টি উইকেট একাই তুলে নেন এ অফি। দারুণ বোলিং করেন সোহাগ গাজীও। এ দুই অফস্পিনারের ঘূর্ণিতে ১১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪৭ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা। কিন্তু সে চাপ অব্যাহত রাখতে পারেনি সিলেট।

স্পিনাররা ভালো বোলিং করে চাপে ফেললেও ফ্লেচারের অদ্ভুত সিদ্ধান্তে পরে আনা হয়নি লেগস্পিনার জীবন মেন্ডিস ও বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুকে। পেসারদের দিয়ে বল করান তিনি। এমনকি জনাথন চার্লসকেও দিয়ে বল করান। যিনি তার ক্যারিয়ারে এর আগে ৩৮০ ম্যাচ খেলে মাত্র ১৯ ম্যাচে বল করেছেন।  আর তার সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই নেন কুমিল্লার ব্যাটসম্যানরা।

দারুণ সেট হয়ে যান দেখে শুনে শুরু করা দুই ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার ও অধিনায়ক ডেভিড মালান। ধীরে ধীরে খোলস ভাঙতে শুরু করেন তারা। দেলোয়ার হোসেনের করা ১৪তম ওভারে তিনটি ছক্কায় ২১ রান তুলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন এ দুই ব্যাটসম্যান। চতুর্থ উইকেটে ৭২ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়েই আউট হন অধিনায়ক মালান। এরপর বাকীটা ডেভিড উইজে ও ইয়াসির আলীকে নিয়ে শেষ করেন সৌম্য। ৫ বল বাকী থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক মালান। ৪৯ বলে সমান ২টি করে চার ও ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৩০ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন সৌম্য। সিলেটের পক্ষে ৪ ওভার বল করে ২১ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নেন নাঈম হাসান।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দেখে শুনে খেলতে থাকে সিলেট। ছোট ছোট তিনটি জুটিতে ২ উইকেটে ১০৮ রান করে ফেলে দলটি। কিন্তু রানের গতি বাড়াতে পারেনি তারা। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪১ রানের সাদামাটা স্কোর নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন আবদুল মজিদ। কিন্তু বল খেলেন ৪০টি। তাতেই বেশ পিছিয়ে যায় সিলেট। ছন্দে থাকা দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন তো ছিলেন আরও খোলসের ভেতরে। ২৫ বলে করেন ১৮ রান। প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি বিদেশিরাও। অধিনায়ক আন্দ্রে ফ্লেচার ২২, জনাথন চার্লস ২৬ ও জীবন মেন্ডিস ২৩ রান করেন। কুমিল্লার পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ডেভিড উইজে ও আল-আমিন হোসেন।

এ জয়ে ১০ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট হলো কুমিল্লার। তালিকার পঞ্চম স্থানে আছে তারা। এক ম্যাচ কম খেলে সমান ১০ পয়েন্ট খুলনা টাইগার্সেরও। তবে রান রেটে এগিয়ে আছে তারা। অন্যদিকে ১২ ম্যাচ শেষে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে আসর শেষ করল সিলেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৪১/৫ (ফ্লেচার ২২, মজিদ ৪৫, চার্লস ২৬, মিঠুন ১৮, মেন্ডিস ২৩, মিলন ২*, গাজী ২*; সানজামুল ০/৩০, রনি ০/১৮, মুজিব ১/২৩, আল-আমিন ২/৩০, সৌম্য ০/৭, উইজে ২/৩১)।

কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ১৯.১ ওভারে ১৪২/৫ (থারাঙ্গা ৪, ফারদিন ১, মালান ৫৮, মাহিদুল ১১, সৌম্য ৫৩*, উইজে ১৩, ইয়াসির ০*; ইবাদত ১/২৬, নাঈম ৩/২১, গাজী ০/১৬, দেলোয়ার ০/৩৫, চার্লস ১/৩৪, অপু ০/৯)।

ফলাফল: কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স ৫ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ডেভিড মালান (কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স)।

Comments

The Daily Star  | English
What’s in the new budget?

Budget to set 10 priorities

Govt puts inflation control, revenue reform, fiscal restraint at the heart of its economic plan

8h ago