কৌশলগত কারণে ওপেনার সাব্বির
হুট করেই এদিন ওপেনার বনে যান কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের সাব্বির রহমান। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, টানা ব্যর্থতার বৃত্তে আবদ্ধ থাকার কারণেই হয়তো ছন্দে ফেরাতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে দলটি। তবে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক ডেভিড মালান জানালেন ভিন্ন কথা। কৌশলগত কারণেই ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে পাঠানো হয়েছে সাব্বিরকে।
আগের দিন সিলেট থান্ডারের দুই অফস্পিনার নাঈম হাসান ও সোহাগ গাজী কোণঠাসা করে ফেলেছিলেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের টপ অর্ডারকে। ১১ ওভারে রান এসেছিল মাত্র ৪৭। অফস্পিনারদের এ সাফল্যের অন্যতম কারণ ছিল কুমিল্লার টপ অর্ডারে চার জন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তাই এদিনও এমন কিছু দেখতে চায়নি দলটি। কারণ আগের দিনের চেয়ে এদিন লক্ষ্যটা আরও বড়।
এছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজ ও গত আসরের চমক আলিস আল ইসলাম, দুই অফস্পিনার বুধবার ছিলেন খুলনা টাইগার্সের একাদশে। যদিও মিরাজ এদিন বোলিং করেননি। কিন্তু ভাবনাটা ছিল। তাই ওপেনিংয়ে দুইজন বাঁহাতি না নামিয়ে একজন ডান হাতি ব্যাটসম্যান নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা। শেষ পর্যন্ত সাব্বির রহমানকেই মাঠে নামায় দলটি। বিকল্প ছিলেন মাহিদুল ইসলাম অংকন। কিন্তু সাব্বিরকে একটু স্বাধীনতা দিয়ে দেখার ইচ্ছাও ছিল দলটির।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মালান বললেন, 'আগের দিন আমরা টপ অর্ডারে চার জন বাঁহাতি খেলিয়েছি এবং তারা অনেক অফ-স্পিন করেছে। তাই আজকে এটা আমাদের কৌশলগত পরিবর্তন আনতে একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে পাঠানো। আমাদের দুটি বিকল্প ছিল। হয় সাব্বির না হয় অংকনকে (মাহিদুল ইসলাম) ওপেনিংয়ে নামিয়ে সাব্বিরকে পাঁচে খেলানো। নির্বাচকরা সাব্বিরকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।'
আর নির্বাচকদের এমন সিদ্ধান্তের যুক্তিটাও তুলে ধরেন মালান, 'তারা বলেছে যে সাব্বিরকে উপরে উঠিয়ে চেষ্টা করা যাক এবং তাকে নিজের মতো খেলার স্বাধীনতা দেওয়া যাক। মাঝেমধ্যে সে পাঁচ নম্বরে নেমে এমন সময়ে ব্যাট করে তখন হয়তো ২/৩টা উইকেট চলে গিয়েছে। আজ আমরা তাকে স্বাধীনতা দিয়ে বলেছি, "তুমি তোমার মতো খেল। তুমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ধ্বংসাত্মক ব্যাটসম্যান। যাও এবং আক্রমণ কর। যদি তুমি আউট হয়ে যাও, সমস্যা নেই। আমরা কিছু মনে করব না। শুধু সেখানে গিয়ে যতটা পার তোমার আগ্রাসন দেখাও।" এবং সে আজ দারুণ খেলেছে।'
আর ভিন্ন পজিশনে নেমে সাফল্য পাওয়ায় সাব্বিরের প্রশংসাও করেছেন মালান, 'রান না করার জন্য গতকালই সে বাদ পড়েছিল। আজকেই সে ৩০ (আসলে ৩৯) বলে ৬০ (আসলে ৬২) রানের অবিশ্বাস্য একটি ইনিংস খেলেছে। স্বাভাবিকভাবে আমার মনে হয়, আপনি মাঠে যাবেন ম্যাচ শেষ করে আসবেন কিংবা ম্যাচ জিতবেন। কতো রান করলেন সেটা না। নিজেকে মূল্যায়ন করবেন কতোটা ম্যাচে জিতেছেন কিংবা জেতাতে ভূমিকা রেখেছেন। আমার মনে হয় সে কিছুটা হতাশ কারণ সে আরও লম্বা সময় ব্যাট করতে পারেননি। তবে যেখান থেকে সে এসেছে, গতকালই সে বাদ পড়েছিল, পুরো টুর্নামেন্টে যেখানে খেলেছে সেখান থেকে ভিন্ন পজিশনে নেমে সে দারুণ খেলেছে।'
এবারের বিপিএলে এদিন প্রথমবারের মতো ওপেনিংয়ে নেমে ৩৯ বলে ৬২ বলের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন সাব্বির। তবে ম্যাচ জেতাতে পারেননি। ১৫তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে যান। সে সময় দলের রান ছিল ১৩০। লক্ষ্য থেকে ৫০ রান দূরে। সাব্বির আউট হওয়ার পরই ভেঙে পড়ে দলটি। শেষ পর্যন্ত ৩৪ রান দূরে থাকতেই গুটিয়ে যায় দলটি।
Comments