স্বাধীনতার পরিবর্তে আমরা স্বৈরতন্ত্রকে মেনে নিয়েছি: ড. কামাল
স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরশাসনের কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য ঝুঁকি নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন।
আজ (১০ জানুয়ারি) এক আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, “সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পথে বাধা তৈরি করা মানে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের অসম্মান করা।”
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, “বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্র চেয়েছিলেন। অথচ আমাদের এখানে এখন গণতন্ত্র নেই। স্বাধীনতার পরিবর্তে আমরা স্বৈরতন্ত্রকে মেনে নিয়েছি। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য মাঝে মাঝে ঝুঁকি নিতে হয় এবং আমাদেরকে ঝুঁকি নিতে হবে।”
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, “আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান যে- আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো মহান নেতার কর্মী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম।”
বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যতোদিন থাকবে, ততোদিন দেশের মানুষ তাকে (বঙ্গবন্ধুকে) স্মরণ করবে এবং শ্রদ্ধা করবে। তিনি দেশকে স্বাধীন করেছিলেন এবং জনগণকে দেশের মালিক করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত দলিলে লেখা আছে, এই দেশের মালিক জনগণ। আমরা বঙ্গবন্ধুর মতো অসাধারণ নেতৃত্ব পেয়েছিলাম বলেই আজ স্বাধীনতা পেয়েছি।”
বঙ্গবন্ধু কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি উল্লেখ করে ঐক্যফন্টের প্রধান বলেন, “আমাদের অবশ্যই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের কোনো সুযোগ নেই, কেননা এদেশে গণতন্ত্র রয়েছে।”
গণফোরামের সভাপতি বলেন, “জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানের মাধ্যমে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, যাতে জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারে।”
ড. কামাল বলেন, “বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত সংবিধান প্রত্যেক স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দেখানো উচিত। স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণ যদি গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনাকে অমান্য করা হবে এবং তাকে অসম্মান করা হবে।”
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনাকে অমান্য না করার দাবি জানিয়ে গণফোরামের সভাপতি বলেন, “শুধুমাত্র বাংলাদেশের মানুষ নয়, পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন ও সম্মান করেন।”
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যখন দেশে ফিরছিলাম, তখন লন্ডন বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সম্মান জানানো হয়েছিলো। ব্রিটেনের পুলিশ বঙ্গবন্ধুকে স্যালুট দিয়ে বলেছিলো- আপনার জন্য আমরা প্রার্থনা করেছিলাম।”
তিনি বলেন, “স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আজকের দিনে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কতো সভা, অনুষ্ঠান হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানানোর উপায় হলো ওনার কথাগুলোকে ষোলো আনা পালন করা।”
ড. কামাল বলেন, “দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, যাতে জনগণ তাদের মৌলিক এবং সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারে।”
Comments