১৯৮৮ সালে ইরানের উড়োজাহাজ ভূপাতিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানে অনিচ্ছাকৃত হামলার মাত্র দুই দিন আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন ৩২ বছর আগের একটি ঘটনা। সে বছর ইরানের একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে একই কায়দায় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে মার্কিন নৌবাহিনী।
১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ জাহাজ থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ইরানের একটি এয়ারবাস এ৩০০ বিধ্বস্ত হয়ে ২৯০ জন নিহত হয়েছিল

ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানে অনিচ্ছাকৃত হামলার মাত্র দুই দিন আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন ৩২ বছর আগের একটি ঘটনা। সে বছর ইরানের একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে একই কায়দায় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে মার্কিন নৌবাহিনী।

পারস্য উপসাগরে ১৯৮৮ সালের ৩ জুলাই গাইডেড মিসাইল বহনকারী ইউএসএস ভিনসেন্‌স থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে এয়ারবাস এ৩০০ উড়োজাহাজটি মাঝ আকাশেই টুকরো টুকরো হয়ে যায়। মারা যান ২৯০ আরোহীর সবাই।

প্রেসিডেন্ট রুহানি গত ৬ জানুয়ারি এক টুইটে ২৯০ সংখ্যাটি উল্লেখ করে লেখেন, “যারা ৫২ সংখ্যার [ইরানে ৫২ স্থাপনায় ট্রাম্পের হামলার হুমকি] কথা বলেন, তাদের ২৯০ সংখ্যাটিও মনে রাখা দরকার। ইরানি জাতিকে কখনো হুমকি দেবেন না।”

৩ জানুয়ারি ভোরে বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাশেম সুলেইমানি নিহত হওয়ার জেরে যুদ্ধ উত্তেজনায় জড়িয়ে পড়ে তেহরান-ওয়াশিংটন। ইরানের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ভূপাতিত করার সেই দিনগুলোও ছিল চরম উত্তেজনায় পূর্ণ।

পারস্য উপসাগরে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র-ইরাকের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে যখন, ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধ জাহাজকে ইরানের জাহাজ মনে করে হামলা চালায় ইরাকের বিমানবাহিনী। ওই ঘটনায় মার্কিন নৌবাহিনীর ৩৭ জন নিহত হন। পরের বছর ১৪ এপ্রিল ইরানের ভাসমান মাইন বিস্ফোরণে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি যুদ্ধজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। প্রতিশোধ হিসেবে চার দিনের মাথায় ইরানের জাহাজ ডুবিয়ে দেয় মার্কিন নৌবাহিনী।

যুদ্ধ উত্তেজনার মধ্যেই ১৯৮৮ সালের ৩ জুলাই নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পর ইরানের বন্দর আব্বাস থেকে উড্ডয়ন করে ফ্লাইট ৬৫৫। এর মাত্র কিছুদিন আগেই ওই বিমানবন্দরে এফ- ১৪ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছিল তেহরান। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ওই ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ইউএসএস ভিনসেনসের দিকে উড়োজাহাজ নিয়ে আসতে থাকায় তাকে দিক পরিবর্তনের জন্য একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল। তবে রেডিওতে তাদের কোনো কথারই জবাব দেওয়া হয়নি। এর মধ্যে আবার ইউএসএস ভিনসেনসের ক্যাপ্টেনকে দেওয়া হয় ভুল তথ্য। রাডারে উড়োজাহাজটিতে নজর রাখা ক্রু-রা ক্যাপ্টেনকে বলেন, একটি এফ-১৪ ফাইটার জেট তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। আর মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ফাইটার জেটের সঙ্গে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লায় চলে আসবে ইউএসএস ভিনসেনস।

রানওয়ে ছাড়ার মাত্র সাত মিনিটের মাথায় উড়োজাহাজটিকে ভূপাতিত করার নির্দেশ দেন ভিনসেনসের ক্যাপ্টেন। জাহাজ থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রে মাঝ আকাশেই বিধ্বস্ত হয় ফ্লাইট ৬৫৫।

যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে হামলার প্রেক্ষাপট থাকার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি দেখালেও স্বীকার করে নেয় যে তাদের ভুলেই ২৯০ যাত্রী নিহত হয়েছিলেন। ঘটনার পরের বছরই ইরান বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে নিয়ে যায়। পরে ১৯৯৬ সালে নিহতদের পরিবারে ক্ষতিপূরণ দিয়ে বিষয়টির সুরাহা করে ওয়াশিংটন।

 

আরও পড়ুন:

উড়োজাহাজ ভূপাতিতের দায় স্বীকারের পর ইরানি প্রেসিডেন্টের ‘গভীর দুঃখপ্রকাশ’

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে উড়োজাহাজ ভূপাতিত করেছে ইরান: যুক্তরাষ্ট্র

ইরান সেনাবাহিনীর ‘অনিচ্ছাকৃত’ গোলার আঘাতে ইউক্রেনের উড়োজাহাজ ভূপাতিত

Comments

The Daily Star  | English

Fashion brands face criticism for failure to protect labour rights in Bangladesh

Fashion brands, including H&M and Zara, are facing criticism over their lack of action to protect workers' basic rights in Bangladesh, according to Clean Clothes Campaign (CCC)..One year after a violent crackdown by state actors and employers against Bangladeshi garment workers protesting

Now