চীনের জলসীমায় আমেরিকার গুপ্তচর ড্রোন!
অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে মাছ ধরছিলেন ক্রোয়েশিয়ার কয়েকজন জেলে। হঠাৎ, তারা পানিতে দেখতে পেলেন অদ্ভুত একটি বস্তু। পরে জানা গেলো, সেটি ছিলো আমেরিকার নৌবাহিনীর আন্ডারওয়াটার সেন্সর সিস্টেম।
গল্প এখানেই শেষ নয়। এরইমধ্যে চীন তার জেলেদের থেকে পাওয়া গেছে এমন তথ্য যার সঙ্গে মিলে যায় ক্রোয়েশিয়ার জেলেদের ঘটনা।
চীনের জেলেদের জন্যে সেদেশের সরকার আয়োজন করছে একটি বিশেষ পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। চীনা জেলেদের জালে এমন যন্ত্র আটকা পরার পর তারা যাতে সেগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয় সেজন্যেই এমন আয়োজন।
গতকাল (১৫ জানুয়ারি) আমেরিকার বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় এ ধরনের যন্ত্র স্থাপন করা হয়ে থাকতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, সেসব যন্ত্রের মাধ্যমে নজরদারী চালাচ্ছে মার্কিন নৌবাহিনী।
চীনের কাছাকাছি এসব যন্ত্রের উপস্থিতি কমাতেই জেলেদেরকে পুরস্কৃত করছে দেশটির সরকার। যাতে তারা তাদের জালে আটকে পড়া গুপ্তচরবৃত্তির কাজে স্থাপিত যন্ত্রগুলোকে সরকারের হাতে তুলে দিতে উৎসাহ পান।
জেলেদের পুরস্কৃত করার এমন কাজে চীন হাত দিয়েছে কারণ ২০১২ সালে দক্ষিণ চীন সাগরে টর্পেডো ক্ষেপণাস্ত্রের আকারের একটি ড্রোন পাওয়া গিয়েছিলো। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সেটি পরিচালনা করা হতো। সেসময় চীনা সংবাদমাধ্যমে যন্ত্রটিকে ‘মার্কিন ডিভাইস’ বলেই উল্লেখ করা হয়েছিলো।
২০১৬ সালেও মার্কিন নৌবাহিনীর একটি আন্ডারওয়াটার ড্রোন জব্দ করেছিলো চীন। সেই বছর থেকেই চীনে জেলেদের এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া শুরু করে।
ফোর্বস প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে এ ধরনের নয়টি ডিভাইস জেলেদের জালে আটকা পড়ে। তারপর তারা সেগুলো জমা দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
চীন কর্তৃপক্ষের মতে, এ ধরনের ডিভাইস হয়তো আন্তর্জাতিক জলসীমার তলদেশে স্থাপন করা হচ্ছে, কিন্তু সেটি চীনের খুব কাছেই। তাদের ধারণা, এর মধ্যে অনেকগুলো ডিভাইস মার্কিন নৌবাহিনীর।
তারা মনে করছে, সেই ডিভাইসগুলো চীন কিংবা এর আশপাশের জলসীমায় পরিচালিত হচ্ছে। সেগুলো পরিচালনা করছে বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনী। তারা মূলত তথ্য সংগ্রহ করতেই এগুলো স্থাপন করছে। তারা যেসব তথ্য সংগ্রহ করছে, সেগুলোর মধ্যে সাগরের গভীরতা, কোলাহল, লবণাক্ততা এবং বিদ্যুৎ প্রবাহের পরিমাপও থাকতে পারে।
এসব তথ্য সাবমেরিনারদের ভবিষ্যতের কাজে কৌশলগত সুবিধা পেতে পারে। পাশাপাশি সাগরতলের অবস্থা সম্পর্কে আরও বেশি জানতে সাহায্য করবে। সেকারণেই মার্কিন নৌবাহিনী এসব কাজে বেশি বিনিয়োগ করে থাকে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
Comments