মেসির গোলে ১০ জনের গ্রানাদাকে হারাল বার্সা
'ফলাফল কি হবে জানিনা, তবে দল ভালো খেলবে।' বার্সেলোনার দায়িত্ব নিয়ে এমনটাই বলেছিলেন নতুন কোচ কিকে সেতিয়েন। তার কথা অনুযায়ী দুর্দান্ত খেলেছে দলটি। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল পায়নি তারা। ১০ জনের গ্রানাদাকে হারাতে ঘাম ছুটে গেছে তাদের। লিওনেল মেসির একমাত্র গোলে স্বস্তির জয়ে মাঠ ছেড়েছে কাতালানরা।
ন্যু ক্যাম্পে রোববার রাতে গ্রানাদাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। এ জয়ে রিয়াল মাদ্রিদকে টপকে ফের শীর্ষে উঠেছে বার্সেলোনা। ২০ ম্যাচ শেষে দুই দলের পয়েন্টই ৪৩। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে আছে বার্সা।
নতুন কোচ কিকে সেতিয়েনের অধীনে প্রথম ম্যাচ। তারপরও এ ম্যাচ নিয়ে খুব একটা আগ্রহ ছিল না বার্সেলোনা সমর্থকদের। মাঠের বড় অংশই ছিল ফাঁকা। উপস্থিত ছিল ৬১ হাজারের মতো সমর্থক। যা চলতি মৌসুমে তৃতীয় বাজে উপস্থিতির রেকর্ড ন্যু ক্যাম্পে। তবে ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ রেখে খেলে কাতালানরা। প্রথম অর্ধে ৮২ শতাংশ বলে দখল রেখেছিল তারা। শেষ পর্যন্ত হয় ৮৩ শতাংশ। বারপোস্টে মোট ১৮টি শট নেয় দলটি। যার ৬টি ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৭৬ মিনিট পর্যন্ত।
এদিন সপ্তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সা। আতোঁয়ান গ্রিজমানের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান প্রান্ত থেকে প্রতিপক্ষ এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে কোণাকোণি এক শট নিয়েছিলেন আনসু ফাতি। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ঠেকিয়ে দেন গ্রানাদা গোলরক্ষক রুই সিলভা। চার মিনিট পর মেসির বাড়ানো বল ধরে ফাতিকে আড়াআড়ি পাস দেন জর্দি আলবা। তবে লক্ষ্যে শট রাখতে পারেননি ফাতি।
১৯তম মিনিটে মেসির ক্রস থেকে ভালো জায়গায় বল পেয়েছিলেন আর্তুরু ভিদাল। কিন্তু তার দুর্বল শট সহজেই ধরে ফেলেন গ্রানাদা গোলরক্ষক সিলভা। দুই মিনিট পর জর্দি আলবার পাস থেকে গোলমুখে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন ফাতি। প্রয়োজন ছিল একটি টোকার। কিন্তু বল পা লাগাতে ব্যর্থ হন এ তরুণ। ৪০তম মিনিটে ফাতিকে ফাঁকায় ভালো পাস দিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু নিজে শট না নিয়ে আড়াআড়ি ক্রস দিতে গিয়ে সে সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। ৪৫তম মিনিটে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া হয় বার্সেলোনার। আলবার ক্রস থেকে মেসির শট বারপোস্ট ঘেঁষে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশা বাড়ে স্বাগতিকদের।
৫০তম মিনিটেও এগিয়ে যাওয়া সুযোগ ছিল বার্সার। ফাতির কাছ থেকে বল দারুণ শট নিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু এবারও অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর ইভান রাকিতিচের দূরপাল্লার শট লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে মেসির সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে গোলরক্ষককে একেবারে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন ভিদাল। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণ করতে দেরি করে ফেলায় নষ্ট হয় সে সুযোগ।
৬৬তম মিনিটে প্রায় গোল খেয়ে ফেলেছিল বার্সেলোনা। পিকে ভুলে নিজের অর্ধে বল হারায় তারা। বল ধরে কার্লোস ফের্নান্দেজ ফাঁকায় বল দেন ইয়ান এটেকিকে। দারুণ শটও নিয়েছিলেন এ ক্যামেরুন তারকা। কিন্তু গোলরক্ষককে মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেনকে ফাঁকি দিলেও বারপোস্টে লেগে ফিরে আসলে বড় বাঁচা বেঁচে যায় বার্সেলোনা। দুই মিনিট পর রাকিতিচের পাস থেকে লক্ষ্যে জোরালো শট নিয়েছিলেন গ্রিজমান। কিন্তু ঝাঁপিয়ে পড়ে তা ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক সিলভা।
৭০তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় গ্রানাদা। নয় মিনিটের মধ্যে দুটি হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন হারমান সানচেজ। এর চার মিনিট পর আলবার ক্রস থেকে ভালো সুযোগ ছিল গ্রিজমানের। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। ৭৬তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় বার্সা। মেসির বাড়ানো বল ধরে ভিদালকে পাস দিয়েছিলেন গ্রিজমান। দারুণ এক ব্যাকহিলে মেসিকে কাটব্যাক করেন ভিদাল। দারুণ এক বুদ্ধিদীপ্ত শটে বল জালে পাঠাতে কোন ভুল করেননি অধিনায়ক মেসি।
৭৯তম মিনিটে বুসকেতসের কাটব্যাক থেকে দূরপাল্লার দারুণ এক শট নিয়েছিলেন মেসি। তবে দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে সে শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক সিলভা। পাঁচ মিনিট পর সহজ এক সুযোগ মিস করেন গ্রিজমান। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে কাটিয়ে বাঁপ্রান্তে এ ফরাসীকে বল দিয়েছিলেন বদলী খেলোয়াড় রিকি পুজ। কিন্তু শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি গ্রিজমান। এরপর আরও বেশ কিছু আক্রমণ করলেও তা থেকে গোল আদায় করে নিতে না পারায় এক গোলের জয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বার্সেলোনাকে।
Comments