ছড়িয়ে পড়ছে চীনের ‘রহস্যময় ভাইরাস’

রহস্যময় এক ভাইরাসের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন চীনের নাগরিকরা। ভাইরাসটি এক ধরনের করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত চারজনের প্রাণহানি হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ২০০ জনেরও বেশি মানুষ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ভাইরাস যাতে প্রকট আকারে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই লক্ষ্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে চীন সরকার।
২০০৯ সালে বিশ্বব্যাপী যখন ‘সোয়াইন ফ্লু’ কিংবা আফ্রিকায় ‘ইবোলা’ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিলো, তখন সেগুলো নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের সরকার যথাযথ ভূমিকা রেখেছিলো।
কিন্তু, বর্তমানে চীন যে পরিস্থিতির মুখে পড়েছে, এমন পরিস্থিতিতে কাউকেই পড়তে হয়নি। কারণ চীনা নববর্ষের প্রাক্কালে এ ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। নববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ইতোমধ্যে চীনে জড়ো হতে শুরু করেছেন লাখো মানুষ। এছাড়াও, আসন্ন চীনা নববর্ষের ছুটিতে সবাই বাড়ি যাবেন, কিংবা ছুটি কাটাতে অন্য কোনো দেশে যাবেন। আর এসব কারণে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, ভাইরাসটি প্রথমে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় উহান প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেলেও এটি ইতোমধ্যে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে পাশাপাশি থাইল্যান্ড, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এসব দেশের যে নাগরিকরা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা সবাই উহান প্রদেশ ভ্রমণ করেছিলেন।
করোনাভাইরাসটি অনেকটা ‘সার্স’ ভাইরাসের মতোই ভয়ঙ্কর। ‘সার্স’ ভাইরাসে ২০০২-০৩ সালে চীন ও হংকংয়ে ৬৫০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছিলেন।
চীনে নতুন এ ভাইরাস সংক্রমণের সংবাদ পাওয়ার পর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে ভাইরাসটির ব্যাপারে ‘ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের’ সতর্কবার্তা পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ এশিয়ার অনেক দেশের বিমান সংস্থাই উহান থেকে আগত যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে।
চলমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিকভাবে জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করা হবে কী না, তা নির্ধারণ করতে আগামীকাল (২২ জানুয়ারি) বৈঠকে বসবেন ডব্লিউএইচও‘র প্রতিনিধিরা।
সতর্ক অবস্থানে বাংলাদেশ
চীনে নতুন এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশও। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, শাহজালাল বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কারণ, চীন থেকে আসা সব বিমান এ বিমানবন্দর দিয়েই ওঠানামা করে। অন্যান্য বন্দরেও চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
Comments