ঢাকার ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির অব্যবস্থাপনার কারণ দর্শানোর নোটিশ হাইকোর্টের
রাজধানীর সড়কে ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণে অব্যবস্থাপনার কারণ শনাক্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
এই অব্যবস্থাপনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা কেনো অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল (২০ জানুয়ারি) একটি রুল জারি করেছেন।
আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক এবং সুলাইমান হাওলাদারের করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার এবং ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শুনানিতে মনোজ বলেন, “রাজধানীর সড়কে ত্রুটিপূর্ণ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে, মানুষ হতাহত হচ্ছেন। জীবনে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার থেকে নাগরিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।”
ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির অব্যবস্থাপনায় দায়ী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আদেশ প্রদান করতে তিনি আদালতকে অনুরোধ করেন।
‘Unutilised Traffic Lights: Money wasted, streets made dangerous’ শিরোনামে গত ১২ জানুয়ারি দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার জনস্বার্থে এই রিট আবেদনটি করা হয়।
২০০২ ও ২০০৫ সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ঢাকা নগর পরিবহন (ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট) প্রকল্পের আওতায় ১৩.৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানীর সড়কে ৬৮ টি সিগন্যাল বাতি স্থাপন করা হয়। কিন্তু, ২০০৬ সালের বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায় যে অব্যবস্থাপনার কারণে বাতিগুলি অকার্যকর হয়ে আছে।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে শেষ হয় ‘ক্লিন এয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট’ প্রকল্প। ওই প্রকল্পের আওতায় ২০১০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে অকার্যকর সিগন্যাল বাতিগুলি সংস্কার করা হয় এবং নতুন করে ১০০ সিগন্যাল বাতি স্থাপন করা হয়। সড়কে আরও কিছু অবকাঠামো মেরামত ও স্থাপনসহ সর্বমোট ১১২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিলো প্রকল্পে।
পরবর্তীতে, সিগন্যাল বাতিগুলি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে সিটি করপোরেশন। কিন্তু, সেগুলো দেখাশোনা এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেউই নেয়নি। রাজধানীর বেশিরভাগ মোড়েই দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশ হাতের ইশারায় যানবাহন এবং পথচারীদের নিয়ন্ত্রণ করে।
আরও পড়ুন:
হাত বাঁশ রশির ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, ১২৭ কোটি টাকার সিগন্যাল বাতি
Comments