পদ্মাসেতু ৩৩০০ মিটার দৃশ্যমান
![Padma Bridge Padma Bridge](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/munshiganj_padma_bridge_2.jpg?itok=orpqkH3n×tamp=1579764186)
পদ্মা সেতুর ‘১ই’নম্বরের ২২তম স্প্যানটি বসানো হয়েছে। আজ (২৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টা ৩২ মিনিটে স্প্যানটি বসানোর কাজ শেষ হয়। এর ফলে সেতুটি ৩,৩০০ মিটার দৃশ্যমান হলো।
সকাল ৯টার দিকে স্প্যানটি ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেনবাহী জাহাজে করে সেতুর মাওয়া প্রান্তের ৫ ও ৬ নম্বর খুঁটির ওপর বসানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ইয়ার্ড থেকে এই খুঁটি দুটোর দূরত্ব খুবই কম হওয়ায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্প্যানটি বসানোর কাজ শেষ হয়।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, আগামী ২৫ জানুয়ারি চায়না নববর্ষ থাকায় নির্ধারিত সময়ের দুই দিন আগেই এটি খুঁটিতে বসানো হচ্ছে। কারণ পদ্মা সেতুতে অনেক চীনা প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মী কাজ করছেন।
৬.১৫ কিলোমিটার এই সেতুতে থাকবে মোট ৪২টি খুঁটি, যার মধ্যে ৩৬টি খুঁটির কাজ শেষ হয়েছে। সেতুতে মোট ৪১টি স্প্যান থাকবে, যার মধ্যে ২২তমটি আজ বসানো হলো। আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই সবগুলো স্প্যান বসানোর কথা রয়েছে।
মূল সেতুটি নির্মাণ করছে চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন। নদী শাসনের কাজে নিয়োগ করা হয়েছে চীনের সিনোহাইড্রো কর্পোরেশনকে। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। এই সেতুর নির্মাণ কাজ তদারক করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বুয়েট ও কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।
সেতুটি নির্মাণ হয়ে গেলে দেশের বাণিজ্য, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। জিডিপি দেড় থেকে দুই শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।
পদ্মা বহুমুখী মূল সেতুর ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্মাণকাজ এবং প্রকল্পের পুরো কাজের ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে গত ১৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফাস্ট ট্র্যাক মনিটরিং কমিটির পঞ্চম সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে সভায় জানানো হয়, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় জাজিরা প্রান্তে সংযোগ সড়কের কাজ ৯১ ভাগ, মাওয়া প্রান্তে সংযোগ সড়কের কাজ ১০০ ভাগ, সার্ভিস এরিয়া (২) ১০০ ভাগ, মূল সেতু নির্মাণ কাজ ৮৫.৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও নদী শাসনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৬৬ ভাগ। সার্বিক প্রকল্পের ৭৬.৫০ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় সড়ক পথে যাওয়ার সময় পদ্মা সেতু পরিদর্শন কথা ছিলো। এ নিয়ে মাওয়া এলাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ ব্যাপক প্রস্তুতি চলাকালে জানা যায় প্রধানমন্ত্রী মাওয়ায় যাত্রা বিরতি করছেন না। প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে সরাসরি টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন। আকাশ থেকেই নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু প্রত্যক্ষ করবেন। তবে পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু পরিদর্শনে আসবেন বলে দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার গতকাল রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর অগ্রগতি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি শুরু হয়েছিলো। তবে পরবর্তীতে টুঙ্গীপাড়া যাওয়ার পথে পদ্মা সেতু পরিদর্শনের অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর দেশের বৃহত্তম এই অবকাঠামো পদ্মা সেতু অগ্রগতি পরিদর্শন এবং এর রেল সংযোগের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন।
Comments