সৌদি থেকে ফিরলেন‌ আরও দুই শতাধিক বাংলাদেশি

Shahjalal Airport
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

সৌদি আরব থেকে আরও ২১৭ জন বাংলাদেশি ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে গতকাল (২২ জানুয়ারি) রাত ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ বিমানযোগে ১০৩ জন এবং আজ ভোররাত ১টা ১০ মিনিটে সৗদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০২ বিমান যোগে ফেরেন ১১৪ জন।

এ নিয়ে গত তিন সপ্তাহে আড়াই হাজারের বেশি বাংলাদেশি সৌদি আরব থেকে ফিরলেন।

প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় বরাবরের মতো গতকালও ফেরত আসাদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়।

গতকাল ফেরত আসা টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার একই পরিবারের দুই ভাই সুজন মিয়া ও মিন্টু মিয়া। সুজন মিয়া পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে মাত্র চার মাস আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। আর মিন্টু মিয়া যান ২৩ মাস আগে।

মিন্টুর আকামার (কাজের অনুমতিপত্র) মেয়াদ পাঁচ মাস থাকলেও সুজনের আকামা তৈরি করে দেয়নি নিয়োগ কর্তা। কিন্তু, দুই সহোদরকেই কর্মস্থল থেকে ঘরে ফেরার পথে পুলিশ আটক করে।

ফেরত আসা নড়াইলের সুজন জানিয়েছেন, অফিসে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি চার লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তিন মাস আগে সৌদি আরবে পাঠায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি কোনো কাজ পাননি‌। বরং ধরা পড়ে দেশে ফিরেছেন শূন্য হাতে।

টাঙ্গাইলের আরেক ফেরত কর্মী লিটন মাত্র ছয় মাস আগে আড়াই লাখ টাকা খরচ করে ওয়েল্ডিংয়ের কাজে সৌদিতে যান। সেখানে গিয়ে কোম্পানিতে কাজ করলেও তাকে কোনো বেতন দেওয়া হয়নি। এমনকী, নিয়োগ কর্তা আকামা তৈরি করে দেয়নি। কর্মস্থল থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে নিয়োগ কর্তা আর লিটন কোনো দায়িত্ব নেননি।

নরসিংদীর মন্টু মিয়া, টাঙ্গাইলের কাদের মিয়া, সিরাজগঞ্জের জাহিদুল, সিলেটের নাজমুলসহ আরও অনেকেই ফিরেছেন যাদের এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ফিরতে হলো।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানিয়েছেন, দেশে ফেরত আসা কর্মীদের কথায় স্পষ্ট যে প্রত্যেককে নানা স্বপ্ন দেখিয়েছিলো দালাল ও রিক্রুটিং এজেন্সি। কিন্তু, সৌদি আরবে গিয়ে তারা নানা সমস্যায় পড়েছিলেন। অনেকে বেতন পাননি। অনেকে সৌদি আরবে যাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে ফেরত এসেছেন। তারা সবাই এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায়।

তিনি আরও বলেছেন, এভাবে যেনো কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে দায়িত্ব নিতে হবে। দূতাবাস ও সরকারকেও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।

এর আগে ২০১৯ সালে ২৫ হাজার ৭৮৯ বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে আড়াই হাজারের বেশি বাংলাদেশি ফিরলেন দেশটি থেকে।

প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্যের বরাত দিয়ে শরিফুল হাসান জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২৫ হাজার ৭৮৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ১৫ হাজার ৩৮৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ছয় হাজার ১১৭ জন, ওমান থেকে সাত হাজার ৩৬৬ জন, মালদ্বীপ থেকে দুই হাজার ৫২৫ জন, কাতার থেকে দুই হাজার ১২ জন, বাহরাইন থেকে এক হাজার ৪৪৮ জন ও কুয়েত থেকে ৪৭৯ জন শূন্য হাতে ফিরেছেন।

সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে বলেও উল্লেখ করেনি তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
G7 statement on Israel Iran war

Sirens sounded after missiles launched from Iran, says Israeli army

Trump to decide within two weeks on possible military involvement

12h ago