আইসিজে শুধু নির্দেশ দিতে পারে, বাস্তবায়নের ক্ষমতা নেই

rohingya refugees
মিয়ানমারে নির্যাতন থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ অভিমুখে রোহিঙ্গাদের ঢল। স্টার ফাইল ছবি

মিয়ানমারে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে দেশটিকে চারটি অন্তর্বর্তী আদেশ পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। তবে আইসিজে কেবল নির্দেশ দিতে পারে। তা বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে বাধ্য করার এখতিয়ার তাদের নেই।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা দায়ের করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। পরে গত ১০-১২ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপী নেদারল্যান্ডের হেগে এ মামলার শুনানি হয়। যেখানে মিয়ানমারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সুচি।

শুনানি চলাকালে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার। মামলার বিস্তারিত তদন্তের আগে কোনো চূড়ান্ত রায় দেবে না আইসিজে। যার জন্য দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন।

কিন্তু, রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে আইসিজেকে অন্তর্বর্তী আদেশ দেওয়ার অনুরোধ জানায় গাম্বিয়া। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল (২৩ জানুয়ারি) মিয়ানমারকে চারটি অন্তর্বর্তী আদেশ পালনের রায় দেন আইসিজে।

গতকাল অন্তর্বর্তী আদেশগুলো পড়ে শোনান আদালতের প্রেসিডেন্ট আব্দুলকাবি আহমেদ ইউসুফ। তিনি বলেছেন, ‘গণহত্যা সনদ’ অনুযায়ী মিয়ানমারকে অবশ্যই তার ভূখণ্ডে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে হবে। সেখানে পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।

সেনা সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তারা যেনো কোনো রকমের গণহত্যা চালাতে না পারে।

রাখাইন রাজ্যে সংগঠিত গণহত্যার তথ্য-উপাত্ত নষ্ট করা যাবে না এবং গতকাল থেকে আগামী চার মাসের মধ্যে মিয়ানমারকে পরিবর্তিত পরিস্থিতির ওপর একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে হবে।

আইসিজে যে রায় দিলো তা নিয়ে কোনো আপিলের সুযোগ নেই মিয়ানমারের।

আইসিজের রায়ের পর ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ রায়কে ‘মানবতার বিজয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “সারাবিশ্বের মানবাধিকার কর্মীদের জন্য এটি একটি মাইলফলক। এটি গাম্বিয়া, ওআইসি, রোহিঙ্গা এবং অবশ্যই বাংলাদেশের বিজয়।”

২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এর আগেও বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান চালিয়েছিলো মিয়ানমার সরকার। সেখান থেকে বিতাড়িত হয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। তারা বর্তমানে কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে।

এসব ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র সমালোচনা-নিন্দার মুখে পড়েছে মিয়ানমার। জাতিসংঘ ২০১৭ সালের হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করলেও বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। সবশেষে তাদের বিরুদ্ধে আইসিজেতে গাম্বিয়া মামলা করলে গতকাল এই অন্তর্বর্তী নির্দেশনা আসে।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women retain SAFF glory

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

14m ago