মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গরু দৌড় প্রতিযোগিতা
কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে দেশের ঐতিহ্যবাহী গরু দৌড় প্রতিযোগিতা। তবে এখনও কোনো কোনো জেলায় ধরে রাখা হয়েছে পুরনো এই ঐতিহ্য। এর মধ্যে অন্যতম মানিকগঞ্জ। প্রতি বছরের মতো এবারও সেখানে আয়োজন করা হয়েছিলো ঐতিহ্যবাহী গরু দৌড় প্রতিযোগিতা।
প্রতিযোগিতার পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছিলো গ্রামীণ মেলা, ঘোড়া দৌড়, নারীদের জন্য পিলো পাসিং ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
গতকাল বিকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আকর্ষণীয় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলো নবগ্রাম দ্বিগবিজয়ী ক্লাব।
প্রতিযোগিতায় মানিকগঞ্জ জেলাসহ আশপাশের এলাকা থেকে নানা আকার ও রঙের শতাধিক গরু নিয়ে এসেছিলেন প্রতিযোগীরা। গরু দৌড় দেখতে ভিড় করেছিলেন কয়েকশ নারী-পুরুষ।
প্রতিযোগিতা উপলক্ষে সেখানে বসেছিলো দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা। সবমিলিয়ে আয়োজনটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিলো।
নবগ্রাম দিগবিজয়ী ক্লাবের সভাপতি গাজী হাসান আল মেহেদী সুহাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, “সরস্বতী পূজা উপলক্ষে গত ১০০ বছর ধরে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে গ্রামবাসী। ১৯৬০ সালে দ্বিগবিজয়ী ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর থেকে ক্লাবটির উদ্যোগেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে আকর্ষণীয় এই গরু দৌড় প্রতিযোগিতা।”
তার মতে, শতবছরের ঐতিহ্যবাহী গরু দৌড় প্রতিযোগিতা অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট আয়োজক সংগঠনের সদস্যসহ গ্রামবাসীরা।
ক্লাবের প্রায় ১০০ কর্মী মিলে আয়োজনটিকে সফল করতে গত একমাস ধরে কাজ করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নবগ্রাম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, তার বাপ-দাদার আমল থেকেই এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে। ঢাকার দোহার, নবাবগঞ্জ, টাঙ্গাইলের নাগরপুরসহ মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিযোগীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এছাড়াও, সেসব এলাকা থেকে দর্শনার্থীরাও অনুষ্ঠান দেখতে আসেন।
গরু দৌড় প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ঘোড়া দৌড়, নারীদের জন্য পিলো পাসিং এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মূল আয়োজনে যোগ করেছিলো নতুন মাত্রা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী জুয়েল মাহমুদসহ স্থানীয় শিল্পীরা।
Comments