আঙুলের ছাপ মেলা নিয়ে বিড়ম্বনা, দুই কেন্দ্রে দুই ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ৫টি
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিতে আজ সকাল সাড়ে ৯টায় রোটারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়েছিলেন রাজাবাজারের বাসিন্দা কল্পনা পালমা।
পোলিং এজেন্টকে ভোটার আইডি নম্বর বলার পর তিনি ইভিএমে তা চাপলে কল্পনার ছবি এবং অন্যান্য তথ্য পর্দায় ভেসে ওঠে। এরপর কল্পনার বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ দিতে বলায় তিনি ছাপ দিলেন। কিন্তু তা মিলেনি।
সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কয়েকবার চেষ্টা করলেন কল্পনার তর্জনী এবং বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ নিতে। এমনকি পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে কয়েকবার মুছে পরিষ্কার করে আঙুলের ছাপ নেওয়ার চেষ্টা করা হলো। দুর্ভাগ্যক্রমে কোনোভাবেই তা মিললো না।
উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন দেখে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে পরামর্শ নিতে গেলেন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা অসিত বরণ তাকে কাগজের ফর্ম পূরণ করিয়ে কল্পনার ভোট নিয়ে নিতে বলেন।
“ভোটারের আঙুলের ছাপ না মিললে পর্দায় ব্যালট দেখা যাবে না। এই ধরনের ক্ষেত্রে, আমাদের বিকল্প উপায় হচ্ছে, প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে ইভিএমে আমার আঙুলের ছাপ দিয়ে ব্যালট দেখাতে পারি”, বলেন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।
এভাবে ত্রিশ মিনিট লাগলো ভোট দেওয়ার জন্য ইভিএম প্রস্তুত করতে। তবে বিস্ময়ের ঘোর তখনও কাটেনি কল্পনার। বুথে ঢোকার পর কী করবেন, সে সম্পর্কেও তার কোনো ধারণা নেই।
এরপর, ক্ষমতাসীন দলের একজন পোলিং এজেন্ট তাকে সাহায্য করতে বুথের ভেতরে ছুটে গেলেন।
সকাল দশটায়, ভোট শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টা পর রোটারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের এক নম্বর কক্ষের দ্বিতীয় ভোটটি কেউ দিতে পারলো।
পাশেই আরেকটি কেন্দ্র নাজনীন বিদ্যালয়। সেখানে পাঁচ নম্বর কক্ষে সকাল দশটা পর্যন্ত ৩৫৪টি ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে মাত্র একটি।
এই দুই ভোটকেন্দ্রের সবগুলি কক্ষ পরিদর্শন করে মাত্র পাঁচটি ভোট পড়তে দেখা গেছে।
সেখানে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ভোট কক্ষে অবাধে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। কখনও কখনও ভোটারদের ‘সাহায্য’ করতে তাদের সঙ্গে বুথেও ঢুকতে দেখা গেছে তাদের।
রাজাবাজারের এই দুই ভোটকেন্দ্র সকাল দশটা পর্যন্ত বিরোধী দলগুলোর কোনো পোলিং এজেন্টের দেখা পাননি দ্য ডেইলি স্টারে সংবাদদাতা।
Comments