দেশে দেশে ‘চীনাতঙ্ক’
দশ বছর বয়সী কন্নর জাতিগতভাবে আধা-চীনা। সে তার সমবয়সী এক চীনা বন্ধুর সঙ্গে খেলছিলো বাড়ির সামনের আঙিনায়। এমন সময় কয়েকজন কিশোর যাচ্ছিলো সেই বাড়ির সামনে দিয়ে। তারা চীনা শিশুদের ডেকে বলে- “এসো আমরা করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ খেলা খেলি”।
কন্নরের মা নাদিয়া আলম গত ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের টাইম ম্যাগাজিনকে বলেন, “এমন অবস্থায় আমরা অস্বস্তিবোধ করছি। আমরাতো অন্যদের মুখ বন্ধ রাখতে পারি না।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বলতে চাই না যে বাচ্চারা আমার ছেলেকে নিয়ে রসিকতা করছে। তবে অন্যদের আচরণে আমার ছেলে কষ্ট পাচ্ছে। সে বিরক্ত হচ্ছে।”
চীনের বাইরে বসবাসকারী লাখো চীনা বা চীনা বংশোদ্ভূত নাগরিকদের প্রতিদিনই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে। কন্নরের কাহিনি এর একটি মাত্র। চীনা বংশোদ্ভূত এমন হাজারো কন্নরকে নিয়ে ঘটছে নানান ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়ানো হচ্ছে ‘চীনা বিদ্বেষ’।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দেশে দেশে ‘চীনা ভীতি’ বা ‘চীনাতঙ্কের’ সংবাদ প্রচার করছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে — ‘করোনাভাইরাস ছড়ানোর পাশাপাশি কি চীনবিরোধী মনোভাবেরও বিস্তার ঘটছে?’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা-ভীতি পরিণত হয়েছে ‘চীনা-ভীতি’তে। পশ্চিমের কোনো কোনো দেশে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে চীনাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে এর প্রতিবাদে।
ফ্রান্সের একটি পত্রিকায় শিরোনাম করা হয়েছিলো ‘ইয়েলো এলার্ট’। এতে চীনা নাগরিকদের প্রতি সেদেশের জনগণের একটি অংশের মনোভাব প্রতিফলিত হয়।
একই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে কানাডাতেও। টরোন্টো ও মন্ট্রিয়েলের রাস্তায় চীনা অভিবাসীদের প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
‘চীনারা জাপানে এসো না’ টুইটারে এমন হ্যাশট্যাগ দিয়ে চীনাবিরোধী কঠোর অবস্থান নিয়েছে জাপানিরা। সিঙ্গাপুরে প্রায় ১০ হাজার অধিবাসী দেশটির সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে যেনো চীনা নাগরিকদের সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করতে না দেওয়া হয়।
এমন ‘চীনা আতঙ্কের’ দেশগুলোর তালিকায় আরও আছে, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
আরও পড়ুন:
Comments