ফরম পূরণ না করেও এসএসসি পরীক্ষায় দুই শিক্ষার্থী
ফরম পূরণ না করেও ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় দুই শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যালয়ের টেস্ট পরীক্ষায় তারা অকৃতকার্য হয়েছিল।
অভিযোগ উঠেছে, ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের দুই কর্মচারী টাকার বিনিময়ে বোর্ডের সার্ভার থেকে ওই দুই ছাত্রীর ফরম পূরণ করে দিয়েছেন।
গতকাল প্রথম পরীক্ষার সময় জালিয়াতির বিষয়টি জানা গেলেও পরীক্ষা দিয়েছে তারা।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শহীদুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “রোববার রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র দুই ছাত্রীর প্রবেশপত্র এসে পৌঁছায়। সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র সচিব মোছা. লুৎফা খাতুন মোবাইল ফোনে বিষয়টি ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নরোত্তম চন্দ্র রায়কে জানান।”
“প্রধান শিক্ষক দুই ছাত্রীকে ডেকে পাঠান এবং জানতে চান কীভাবে তারা ফরম পূরণ করেছে। তারা লিখিতভাবে আমাদের জানিয়েছে, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী মহসিন আলম ওরফে রনি এবং বোর্ডর ক্লার্ক আনোয়ারুল কাদির টাকার বিনিময়ে বোর্ডের সার্ভার থেকে তাদের ফরম পূরণ করে দিয়েছেন”, বলেন শহীদুল হক।
নরোত্তম চন্দ্র রায় বলেন, “বিষয়টি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে আমি গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেঁজুতি ধরকে বিষয়টি জানাই। দুই ছাত্রী ইউএনও’র সামনেই তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষকেও আমি পুরো ঘটনা জানিয়েছি। টেস্ট পরীক্ষায় মোট ২৫৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৪৫ জন উত্তীর্ণ হয়। আমরা শুধুমাত্র উত্তীর্ণদের এসএসসি পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিয়েছি। ফরম পূরণের জন্য ২৪৫ জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে।”
“অকৃতকার্য ১৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই ছাত্রী অসদুপায় অবলম্বন করে ফরম পূরণ করেছে। আমি চাই, এই ঘটনায় যথাযথ তদন্ত হোক এবং প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনা হোক”, বলেন নরোত্তম চন্দ্র রায়।
বিষয়টি তদন্ত করতে ইতোমধ্যে কমিটি গঠন করেছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। বোর্ডের সচিব অধ্যাপক কিরিত কুমার দত্তকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন, বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. শামসুল ইসলাম এবং সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সাখাওয়াত হোসাইন। আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. গাজী হাসান কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “বোর্ড থেকে এ ধরনের কাজ করার কোনো সুযোগই নেই। বোর্ডের সার্ভারে প্রবেশ করতে হলে অবশ্যই স্কুলের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। যারা অনলাইন পদ্ধতিতে ফরম পূরণের জন্য টাকা জমা দিয়েছে, বোর্ড থেকে শুধুমাত্র তাদের প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে।”
Comments