তারা দেশকে এমন কিছু দিতে চান, যা উদাহরণ হয়ে থাকবে

বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটার এমন নির্ভুল ইংরেজিতে গুছিয়ে পরিনত কথা বলতে পারে! তাও কিনা একেবারে বয়সভিত্তিক পর্যায়ের কোন ছেলে। আইসিসির ফেসবুক পাতায় দেওয়া প্রান্তিক নওরোজ নাবিলের সাক্ষাতকারের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে এরকম বিস্ময়ই জানাচ্ছেন মানুষ। শুধু তিনিই নন, পরিস্কার চিন্তা আর গুছিয়ে কথা বলে প্রশংশিত হচ্ছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিবও। এই দুজনেই জানিয়েছেন পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে কোন বিশ্বকাপ এনে দেবেন তারা। নিজেদের ক্রিকেটীয় স্কিল আর ভয়ডরহীন মানসিকতা দিয়ে আগামীর জন্য তৈরি করবেন উদাহরণ।

দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় শুরু হবে যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল। প্রতিপক্ষ অনেক আসরে অনেকবার বাংলাদেশকে হতাশায় পুড়ানো ভারত। কিন্তু এবার আর কোন ভুল নয়, নয় আক্ষেপের গল্প। প্রান্তিক জানালেন এবার তারা এমন কিছুই দেশকে দিতে চান যা উদাহরণ হয়ে থাকবে,  ‘ক্যারিয়ার শুরুর পর সব ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা। এটাই প্রথম স্বপ্ন, দেশকে বিশ্বকাপ জেতানো। তারকা হব, এটা নয়। দেশের হয়ে কিছু করার আগে কেউ যদি ভেবে থাকে তারকা হবে, আমি মনে করি সে বেশি দূর যেতে পারবে না। তাই দেশাত্মবোধটাই সবার আগে। এই দলে ১৫ জনের সবাই শিরোপা জিততে চায়, দেশকে জেতাতে চায়। আমরা এমন কিছু উপহার দিতে চাই ভবিষ্যতে সবাই যেন তা মনে রাখে।’ প্রান্তিকের কথা দেখুন এখানে

এবার বিশ্বকাপ শুরুর আগেই বাংলাদেশ বলে আসছে তারা যেতে চায় অন্তত ফাইনালে। তাতে অনেকেরই চোখ কপালে উঠেছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলির সেই কথা ফলেছে পুরোপুরি। ভারতের মতই অপরাজিত থেকে ফাইনালে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। দেশের ইতিহাসে আর কোন যুব দল যেতে পারেনি এতটা। 

কি করে এমন সাফল্য? প্রান্তিক জানালেন গত দুই বছর ধরে এই সাফল্যের জন্য খাটছেন তারা। তৈরি করেছেন নিজেদের, দেশে, দেশের বাইরে খেলেছেন ৩০টি যুব ওয়ানডে। আসল পরিবার ফেলে সতীর্থদের মাঝে বানিয়ে নিয়েছেন নতুন পরিবার,  ‘আমরা দুই বছর ধরেই একটা দল হিসেবে খেলছি। আমাদের অনেকেই অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ একসঙ্গে খেলেছে। দুই বছর সময় কম হতে পারে কিন্তু যখন একটা দলের সবাই একসঙ্গে ক্যাম্প করে, এক জায়গায় থাকে তখন সেটা পরিবার হয়ে যায়। এটা অন্য রকম অভিজ্ঞতা বলতেই হবে। আমরা অনেক চাপের মুহূর্ত সামলেছি। প্রতিটি ম্যাচেই কিছু না কিছু শিখেছি।’

এরপরের অংশে প্রান্তিকের ব্যাখ্যা করেছে আরও মুগ্ধ ।  উদাহরণ দিয়ে এই তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বুঝিয়েছেন নানান রকম পরিস্থিতিত ভেতর গিয়ে কীভাবে তারা হয়ে উঠেছেন একটি দল, ‘অনেকটাই পরীক্ষার মতো। প্রতিটি পরীক্ষায় প্রতিবারই নতুন প্রশ্ন—কখনো দ্রুত উইকেট হারিয়েছি, কখনো আবার ভালো শুরু পেয়েছি। এই দলে সবারই কিছু না কিছু ভূমিকা আছে। কেউ তারকা হওয়ার চেষ্টা করে না। খুব সাধারণ পরিকল্পনা, সতীর্থরা একে অপরের ওপর আস্থা রাখে। কেউ কাউকে দোষারোপ করে না। কেউ শূন্য মারতেই পারে, কিন্তু সেদিন যে ভালো খেলেছে, আমরা তাকে নিয়ে কথা বলি। তখন ওই খেলোয়াড়ও সমর্থন দেবে এবং ভাববে আজ তুমি দেশকে জেতালে, কাল আমি জেতাব। এমন মানসিকতা দু-এক দিনে গড়ে ওঠেনি। মাঠ ও মাঠের বাইরে এটি দলীয় ঐক্যের ফসল। এখন আমরা যেকোনো পরিস্থিতি সামলাতে পারি। কারণ দলের সবাই জানে, কেউ না কেউ পারফর্ম করবে।’

এবার বিশ্বকাপে টিম কম্বিনেশনের কারণে দলে জায়গা হচ্ছে না প্রান্তিকের। তবে নিয়মিতই খেলছেন পেসার সাকিব। শুধু খেলেছেনই না, দলের পেস আক্রমণের মূল ভরসাও তিনি। ডানহাতি এই পেসার বেশ ভালো গতিতে বল করতে পারেন। ফাইনালে ভারতীয় অধিনায়ক প্রিয়ম গর্গকে বোল্ড করতে চান। ডেল স্টেইনকে আদর্শ মানা সাকিব পেসারদের আদি আকৃত্তিম আগুন দিয়ে আঘাত হানতে চান প্রতিপক্ষ শিবিরে। আর সেটা হলে আসবে কাপ। কাপ জিতলে বিশেষ নাচেরও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের যুবারা।

 

Comments

The Daily Star  | English

New polls timing: BNP upbeat, process irks Jamaat, NCP

The interim government’s revised election timeline with certain conditions has stirred cautious optimism as well as raised questions among  political parties.

8h ago