মাদক পাচার বন্ধে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে দেশে মাদকের পাচার বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে দেশে মাদকের পাচার বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

তিনি বলেন,“এখনও কোন কোন পয়েন্ট দিয়ে দেশে মাদক আসছে তা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে যৌথভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে এই মাদকগুলো আর আসতে না পারে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের মাদকবিরোধী অভিযানের ফলে মাদক পাচার আগের চাইতে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি এই অভিযান অব্যাহত রাখতে তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।

ড.শিরীন শারমীন চৌধুরী এ সময় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন,“একটা সমস্যা হচ্ছে যখন আমরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করি তখন আরেকটার উৎপত্তি ঘটে। সেটাকে আবার নিয়ন্ত্রণ করতে করতে আবার আরেকটার উৎপত্তি ঘটে। এ কারণেই এ বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন এবং ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

মাদক একটা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কীভাবে মাদক ঢোকে, দেশের অভ্যন্তরে কেউ মাদক প্রস্তুত করে কি না, মাদক যারা সেবন করে অথবা বিক্রি করে বা ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত, সকলের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন,তার সরকার সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং মাদক-এই তিনটিকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এগুলো নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সর্বস্তরের মানুষকে সম্পৃক্ত করে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের ন্যায় জনসচেতনতামূলক সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলে মাদক নির্মূলেও সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “সেজন্য খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ছেলে-মেয়েদের বেশি করে সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। তবে, বাবা-মা, শিক্ষক এবং অভিভাবকদেরকে নিজ নিজ সন্তানের বিষয়ে আরও একটু বেশি সচেতন হতে হবে।”

“কার সঙ্গে মিশছে, কীভাবে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে, কী করছে -বিষয়গুলো তাদেরও একটু দেখা দরকার। কারণ অনেকটা দায়িত্ব তাদের ওপরও বর্তায়,” যোগ করেন তিনি।

সংসদ নেতা মাদক নিয়ন্ত্রণে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সংসদ সদস্য যারা রয়েছেন বা সচেতন নাগরিক যারা রয়েছেন তারাও যেন নিজেরা একটু সচেতন হন। তাদের আশেপাশে এবং ছেলে-মেয়ে যারা আছে তারাও যেন মাদক থেকে দূরে থাকেন।

তিনি বলেন,“কারণ এর জন্য শারীরিক, মানসিক, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে কারণে এ ব্যাপারে সমাজকে আরও সচেতন হতে হবে । অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় আমরা তা করছি। তবে,অভিভাবক, শিক্ষকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকেও এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।”

তিনি বলেন, “চলমান অভিযানের কারণে মাদক অবশ্যই কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং এটা অব্যাহত থাকবে।”

তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ধর্ম নিয়ে রেষারেষি করাটা উচিত নয়। যারা সত্যিকারভাবে ইসলামে বিশ্বাস করেন, তারা যার যার ধর্ম তাকে পালন করার সুযোগ করে দেবেন।”

তিনি সুরা কাফিরুনের আয়াত ‘লাকুম দিনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন’ উল্লেখ করে বলেন, যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে- এটা ইসলামেরই শিক্ষা। একজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বী যেমন স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করবে, তেমনি ইসলামের অনুসারীরাও নিজের মতো করে ধর্ম পালন করতে পারবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম। তবে, এই ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে গুটিকয়েক লোক এই ধর্মকে সকলের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করছে । জঙ্গিবাদ শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী একটি সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।

সংসদ নেতা বলেন, তার সরকার সবসময়ই এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে এসেছে এবং এই ধর্মের নামে যাতে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি না হয়, সেজন্য দেশের ছাত্র-ছাত্রী, যুব সমাজ এবং আলেম-ওলামাদের সম্পৃক্ত করে এ বিষয়ে দেশব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং ভালো ফলও লাভ করছে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago