আখাউড়া-আগরতলা রেল যোগাযোগ আগামী বছরেই: ভারতীয় হাইকমিশনার
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেছেন, আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা রেল লিংক লাইনের কাজ শেষ হবে। আগামী বছরেই দুই দেশের মধ্যে রেল যোগাযোগ চালু হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় আখাউড়া-আগরতলা রেল লিংক লাইনের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রেলওয়ে উপদেষ্টা) আনিতা বারিক, হাইকমিশনারের প্রটোকল অফিসার অমরেশ কুমার, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, “এই প্রকল্পটি দুই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগ এই রেলপথের মাধ্যমে হবে।”
সীমান্তে হত্যা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে ভালো সম্পর্ক বজায় রয়েছে। তাদের নিজেদের মধ্যে সব সময় কথাবার্তা হয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে দুই বাহিনী বছরে দুইবার বৈঠক করে। আশা করছি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এসব বিষয়ের সুরাহা হবে।”
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল’র প্রকৌশলী মামুনুর রশীদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আখাউড়া-আগরতলা রেল লাইন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে ব্যয় হবে ৪৭৭ কোটি টাকা। আগরতলার নিশ্চিন্তপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার লাইন নির্মাণে কাজ করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। ভারতীয় অংশে অর্থাৎ ত্রিপুরায় হবে ৫ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশ অংশে হবে ১০ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ লাইন বসানো হবে। বাংলাদেশ অংশের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪০ কোটি টাকা এবং ভারতীয় অংশের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩৭ কোটি টাকা।”
এই প্রকৌশলী আরও বলেন, “বাংলাদেশ অংশে ১০ কিলোমিটার মূল রেলপথ ছাড়াও ৪ দশমিক ২৫ কিলোমিটার লুপ লাইন রাখা হবে। তিনটি বড় ও ২০টি ছোট রেলসেতু নির্মাণ করা হবে। আখাউড়া, গঙ্গাসাগর ও ভারতের নিশ্চিন্তপুরে তিনটি স্টেশনে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিগন্যালের ব্যবস্থা রাখা হবে। ভারতের পাঁচ কিলোমিটার অংশ জনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ একটি উড়াল রেলপথ নির্মাণ করা হবে।”
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এটি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ষষ্ঠ রেলসংযোগ রুট। দীর্ঘ ৭১ বছর পর বাংলাদেশের আখাউড়া ও ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার মধ্যে রেল সংযোগ চালু হতে যাচ্ছে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর এই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
Comments