বুড়িমারীতে সিলিকোসিসে আক্রান্ত পাথরশ্রমিকের মৃত্যু

লালমনিরহাটে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই পাথর ভাঙ্গার কাজ করছেন শ্রমিকরা। ছবি: স্টার

সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাথরশ্রমিক মমিন আলী (৪০) মারা গেছেন।

আজ শনিবার দুপুরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

মৃত মমিন আলী পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকার উফারমারা গ্রামের সহিদার রহমানের ছেলে।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে গত একমাস শয্যাশায়ী ছিলেন মমিন। টাকার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছিলেন না তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ছয়-সাত বছরে মরণব্যাধি সিলিকোসিস (ফুসফুসে সিলিকা কণার দূষণ) রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ৬৬ জন পাথরশ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে এ শতাধিক শ্রমিক রোগে আক্রান্ত। এদের মধ্যে ৭০ জনের অবস্থা গুরুতর।

সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত পাথর শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দাবিতে করা আন্দোলনের সভাপতি ছিলেন মমিন আলী। রাজশাহী শ্রম আদালতে করা ৬২টি ক্ষতিপূরণ মামলার একটির বাদী ছিলেন তিনি।

সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত একই গ্রামের পাথরশ্রমিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “মমিন ভাই আমাদের নেতা ছিলেন। তিনি আমাদের ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য ছোটাছুটি করতেন। শ্রম আদালতের মামলাগুলোর দেখাশোনা করতেন।”

এ রোগে আক্রান্ত আরেক শ্রমিক খালপাড়া গ্রামের মহিরউদ্দিন। তিনি বলেন, “আগের পাথর ভাঙ্গা ফ্যাক্টরির মালিকরা সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ আমাদের খোঁজ রাখছেন না। এখন ক্ষতিপূরণ তো দূরের কথা, চিকিৎসার সামান্য টাকাও জোগাড় করতে পারছি না।”

লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কাশেম আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “সিলিকোসিস একটি মরণব্যাধি। এ রোগ মানুষের ফুসফুসকে আক্রান্ত করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। শুধু ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে এ রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়।”

“মাস্ক ব্যবহার না করে দীর্ঘদিন পাথর ভাঙ্গার কাজ করার ফলে পাথরের কনা ধুলোবালির সঙ্গে নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে ফুসফুস আক্রান্ত করে এ রোগের সৃষ্টি হয়,” যোগ করেন কাশেম আলী।

Comments

The Daily Star  | English

Israel stands down alert after Iran missile launch

Israel hits nuclear sites, Iran strikes hospital as conflict escalates

22h ago