শান্তর ডাবল সেঞ্চুরিতে উদ্ভট সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে যাচ্ছে দক্ষিণাঞ্চল!
ফাইনালে যেতে হলে জেতার কোনো বিকল্প নেই মধ্যাঞ্চলের। বিপরীতে কোনোক্রমে হার এড়াতে পারলেই ফাইনাল নিশ্চিত দক্ষিণাঞ্চলের। কিন্তু তারপরও প্রথম ইনিংসে উদ্ভট এক সিদ্ধান্ত নিয়ে মাত্র ১১৪ রানেই ইনিংস ঘোষণা করেছিল তারা। আর তার খেসারত হয়তো দিতে হচ্ছে দলটিকে। নাজমুল হোসেন শান্তর ডাবল সেঞ্চুরিতে তাদেরকে বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে মধ্যাঞ্চল। তৃতীয় দিন শেষে ৩৪৭ রানে পিছিয়ে আছে দক্ষিণাঞ্চল। এর মধ্যেই তারা হারিয়েছে টপ অর্ডারের ৪ উইকেট। ম্যাচ বাঁচাতে হলে হাত থাকা ৬ উইকেট নিয়ে শেষ দিনে লড়তে হবে দলটিকে।
আগের দিন প্রতিপক্ষের বোনাস পয়েন্ট ঠেকাতে আগেভাগে ইনিংস ঘোষণা করেছিল দক্ষিণাঞ্চল। কিন্তু সেটা ঠেকাতে গিয়ে বড় হারই মানতে হতে পারে দলটিকে। কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে মধ্যাঞ্চলের ছুঁড়ে দেওয়া ৫০৭ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছে দক্ষিণাঞ্চল।
এত বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে তাদের প্রয়োজন ছিল দারুণ কিছুর। কিন্তু দলকে হতাশ করে দলীয় ৫ রানেই ফিরে যান অভিজ্ঞ ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীস। এরপর অবশ্য দ্বিতীয় উইকেটে এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ৮৭ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। তিনি আউট হয়ে গেলে শামসুর রহমানের সঙ্গে ৫৯ রানের জুটি গড়েন বিজয়। এ জুটি ভাঙার পর দ্রুত আরও একটি উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়েছে দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৩ রানের ইনিংস খেলেছেন বিজয়। ১১৯ বলে ৫টি চার ও ৭টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এ ওপেনার। শামসুর রহমান অপরাজিত আছেন ৪৪ রানে। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা তার সঙ্গী নাসুম আহমেদ উইকেটে আছেন ১ রান নিয়ে। এছাড়া ফজলের ব্যাট থেক আসে ২৫ রান। মধ্যাঞ্চলের পক্ষে ২টি উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১টি করে শিকার মোস্তাফিজুর রহমান ও শুভাগত হোমের।
এর আগে মধ্যাঞ্চলকে বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়া পুঁজিটা এদিন তরুণ শান্তই গড়ে দিয়েছিলেন। আগের দিনই সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া এ ব্যাটসম্যান এদিন তুলে নিয়েছিলেন নিজের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। হয়তো ইনিংস বড় করতে পারতেন আরও। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৫৩ রান করার পর ইনিংস ঘোষণা করেন অধিনায়ক শুভাগত।
তবে শান্ত নিজের ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে। আগের দিন ১৮৯ বল ১২২ রানে অপরাজিত থাকা এ ব্যাটসম্যান এদিন আরও ১৩১ রান করেছেন মাত্র ১২১ বলে। ২৯১ বলে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পরের ১৯ বলে করেছেন ৫০ রান। মূলত তার ইনিংসে ভর করেই বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয় দলটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন রকিবুল হাসান। ৮ উইকেটে ৩৮৫ রান তোলার পর ইনিংস ঘোষণা করে মধ্যাঞ্চল। দক্ষিণাঞ্চলের পক্ষে ৮৫ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নিয়েছেন নাসুম। এছাড়া শফিউল ইসলামের শিকার ২টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (তৃতীয় দিন শেষে)
মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস: ২৩৫
দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস: ১১৪/৪ (ডিক্লেঃ)
মধ্যাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংস: ১০৭ ওভারে ৩৮৫/৮ (ডিক্লেঃ) (আগের দিন ২০৯/৬) (সাইফ ১, মজিদ ১৪, শান্ত ২৫৩*, রকিবুল ৩৯, মার্শাল ১১, শুভাগত ১৮, মিরাজ ৬, জাবিদ ৩৬, সানি ৫, মোস্তাফিজ ৩*; শফিউল ২/৩৮, রেজা ০/২৫, মেহেদী ১/১৩১, রাজ্জাক ১/৯৩, নাসুম ৪/৮৫)।
দক্ষিণাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংস: ৫২ ওভারে ১৫৯/৪ (নাফীস ৫, বিজয় ৮৩, ফজলে ২৫, শামসুর ৪৪*, শুক্কুর ০, নাসুম ১*; ইফরান ০/১২, মোস্তাফিজ ১/১৭, মিরাজ ২/৫৫, সানি ০/৫৩, শুভাগত ১/২১)।
Comments