ফিটনেসহীন যান চলাচল বন্ধে ডিসিদের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ

ফিটনেসহীন যান চলাচল বন্ধে প্রতিটি জেলায় একটি করে টাস্কফোর্স গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে টাস্কফোর্সের সদস্যদের নিবন্ধনহীন যানবাহন তদারকি করতে বলা হয়েছে।
পরিবেশ দূষণকারী টু-স্ট্রোক ইঞ্জিনের এই তিন চাকার গাড়িগুলো রাজধানীর লালবাগ এলাকায় চলাচল করে। শহরে এগুলোর চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এগুলোর কোনো ফিটনেসে সনদও নেই। এই যানবাহনগুলোর কোনো প্রকার সিগনাল বাতি এমনকি নম্বর প্লেটও নেই। এগুলোর মালিকরা কয়েকটি সংখ্যা লিখে রেখেছেন— যা দেখে মনে হবে এই যানবাহনগুলো নিবন্ধিত। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ছবি: আনিসুর রহমান

ফিটনেসহীন যান চলাচল বন্ধে প্রতিটি জেলায় একটি করে টাস্কফোর্স গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে টাস্কফোর্সের সদস্যদের নিবন্ধনহীন যানবাহন তদারকি করতে বলা হয়েছে।

গতকাল রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী টাস্কফোর্স গঠনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবদের আদেশ দেন।

টাস্কফোর্সে নেতৃত্ব দেবেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের রাখতে বলা হয়েছে। ফিটনেসহীন এবং অনিবন্ধিত যান চলাচল বন্ধে জব্দ এবং বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এসব নির্দেশনা পরিপালন করে সংশ্লিষ্টদের আগামী তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের বেঞ্চ এই বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী পহেলা জুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন।”

গত বছরের ২৩ মার্চ দ্য ডেইলি স্টারে ‘নো ফিটনেস ডকস, ইয়েট রানিং’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এলে ওই বছরের ২৭ মার্চ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করেন।

তবুও এই যানবাহনগুলোকে রাজধানীর বুকে যাত্রী বহন করতে দেখা যায়। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০। ছবি: আনিসুর রহমান

রুলে ফিটনেসহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং মোটরচালিত যানবাহন অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে সারাদেশে ফিটনেসবিহীন ও নিবন্ধনবিহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সবিহীন চালকের তথ্য প্রতিবেদন আকারে আদালতে জমা দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেয় বিআরটিএ। তাতে উল্লেখ করা হয়, বিআরটিএ’র হিসাব অনুযায়ী চার লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৯টি যানবাহনের বৈধ কাগজপত্র নেই। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র এক লাখ ৬৫ হাজার ৭৬৪টি যানবহনের ফিটনেস সনদ নবায়ন করা হয়। অর্থাৎ গত বছরের ৩০ ডিসেম্বরের পর থেকে সড়কে দুই লাখ ৯২ হাজার ৫৯৫টি ফিটনেসহীন যানবাহন চলছে।

একই দিন পুলিশ মহাপরিদর্শকের কার্যালয় থেকে আরেকটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আদালতে প্রতিবেদনটি জমা দেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, ফিলিং স্টেশনগুলোতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে— বৈধ ফিটনেস সনদ না থাকলে যেন জ্বালানি বিক্রি করা না হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago