পেসারদের সামলে অনিয়মিত স্পিনারদের বিপক্ষেই ভুগল জিম্বাবুয়ে
ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কেমন উইকেট বানাবে বাংলাদেশ? চিরাচরিত স্পিন উইকেট, নাকি পাকিস্তানে দ্বিতীয় টেস্টকে লক্ষ্য রেখে সিমিং উইকেটে নিজেদের ঝালিয়ে নেবে তারা। তবে চিরায়ত ঘূর্ণি উইকেট বানালে যে সুফল মিলবে, তার আভাস মিলেছে বিকেএসপিতে। টেস্ট ম্যাচের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে এদিন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা পেস বোলিংয়ে সাবলীল ব্যাট চালালেও তাদের অস্বস্তি ধরা পড়েছে স্পিনারদের বিপক্ষে।
মঙ্গলবার প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনে ৭ উইকেটে ২৯১ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। সফরকারী দলকে সেরা প্রস্তুতির সুযোগ না দিতে এই ম্যাচে কোন বিশেষজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার খেলায়নি বিসিবি একাদশ। একাদশে ছিলেন দুই লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। তারা থেকেছেন উইকেটশূন্য। ৭ উইকেটের ৫টাই তাই তুলেছেন ব্যাটিং নির্ভর দুই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার শাহাদাত হোসেন আর আল-আমিন জুনিয়র।
সাভারের বিকেএসপিতে প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য এদিন এক ঝাঁক তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত হয় বিসিবি একাদশ। এর মধ্যে সদ্য যুব বিশ্বকাপ জেতা দলেরই পাঁচ জন। বাকি যারা আছেন তাদের মধ্যে এক আল-আমিন জুনিয়র ছাড়া বাকী কারও বয়স ২০ এর বেশি হয়নি। একেবারে আনকোরা দলটি অবশ্য শুরুটা ভালো করতে পারেনি। মুকিদুল ইসলাম, সুমন খান ও শরিফুল ইসলামের পেস বলের বিপক্ষে সাবলীলভাবে চালিয়ে ১০৫ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন দুই ওপেনার প্রিন্স মাসভাউরে ও কেভিন কাসুজা।
তবে সুযোগ যে একেবারেই দেননি তাও নয়, মাঝে মুকিদুল ইসলামের মুগ্ধের বলে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন মাসভাউরে। কিন্তু সে ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি অধিনায়ক আল-আমিন। পরে বল হাতে নিয়ে তিনিই ভেঙেছেন ওপেনিং জুটি। এরপরই দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে বিসিবি একাদশ। অবশ্য তার সবটুকুই অফস্পিনার শাহাদাত হোসেনের হাত ধরে। একাই তুলে নেন তিনটি উইকেট। তাতে টপাটপ ৭২ রানের ব্যবধানে ৬ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ক্রেইগ আরভিনকে সুমনের তালুবন্দি করে প্রথম উইকেট নেন শাহাদাত। এরপর রেজিস চাকাভা ও টিনোটেন্ডা মুতোম্বদজিকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি।
কিন্তু ছয় উইকেট তুলে নেওয়ার পর স্বাগতিকদের আবার অস্বস্তিতে ফেলে দেয় জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। সপ্তম উইকেটে টিমিকেন মারুমাকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন কার্ল মুম্বা। গড়েন ৪৯ রানের জুটি। তাতে কক্ষপথে ফিরে আসে দলটি। বল হাতে নিয়ে আবারও এ জুটি ভাঙেন আল-আমিন। এরপরও স্বাগতিকদের ভোগান্তি কমেনি। আইনস্লে এনডলভুকে নিয়ে আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন মুম্বা। অষ্টম উইকেটে এ দুই ব্যাটসম্যান অপরাজিত থেকে গড়েছেন অবিচ্ছিন্ন ৬৫ রানের জুটি। তাতেই বড় রানের ভিতটা পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দিনশেষে ৭ উইকেটে ২৯১ রান তুলেছে দলটি।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলেছেন কাসুজা। ১৩০ বলে ১২টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। মুম্বা অপরাজিত আছেন ৫৪ রানে। ১০৫ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া মাসভাউরে করেছেন ৪৫ রান। মুম্বার সঙ্গে আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান এনডলভু উইকেটে আছেন ২৫ রানে। বিসিবি একাদশের পক্ষে ৮ ওভার বল করে ১৬ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন শাহাদাত। ২টি উইকেট নিয়েছেন অধিনায়ক আল-আমিন। ১টি শিকার শরিফুলের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৯০ ওভারে ২৯১/৭ (মাসভাউরে ৪৫, কাসুজা ৭০, মাদজিঙ্গানায়মা ১৭, আরভিন ১০, মারুমা ৩৪, চাকাভা ১৩, মুতোম্বদজি ০, মুম্বা ৫৪*, এনডলভু ২৫*; মুকিদুল ০/৩৯, শরিফুল ১/৪৫, সুমন ০/২৯, আমিনুল ০/৭৭, আল-আমিন ২/৪০, রিশাদ ০/২৬, শাহাদাত ৩/১৬)।
Comments