পুরোহিতের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ভোলা সদরের ‘শ্রী শ্রী মদন মোহন ঠাকুর জিউ মন্দির’ এর পুরোহিত নির্মল ভট্টাচার্যের (৫০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় মন্দিরের একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করে।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। মন্দিরের আশ্রিত নারী কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতি হওয়ার ঘটনায় তিনি এমনটি করে থাকতে পারেন।
স্থানীয় বাসিন্দা, মন্দির কমিটি ও পুলিশের কাছ থেকে জানা যায়, এই মন্দিরের পুরোহিত নির্মল ভট্টাচার্য গত দুই বছর আগে নিযুক্ত হন। তার বাড়ি খুলনার পাইকগাছায়। মন্দিরে দীর্ঘদিন ধরে রান্নার কাজ করেন আগের পুরোহিত নারায়ণ পতির স্ত্রী অঞ্জলি পতি (৬০)। ভক্তদের দেওয়া প্রণামির ১০ টাকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে অঞ্জলি পতির সঙ্গে নির্মল ভট্টাচার্যর প্রথমে বচসা ও পরে হাতাহাতি হলে জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর দুলাল চন্দ্র ঘোষ ও সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। একজন নারীর গায়ে হাত তোলার ঘটনায় তারা পুরোহিতকে তিরস্কার করে আজ বুধবার সালিশি বৈঠক করার জন্য সময় নির্ধারণ করেন। উপস্থিত সকলেই এই ঘটনায় পুরোহিতকে দায়ী করেন।
এ ঘটনার পর রাত আটটার নির্ধারিত আরতি শেষ করে নির্মল তার নিজ কক্ষে চলে যান। এরপর ভক্তরা পুরোহিত নির্মলকে ডেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং তাকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পুরোহিত একটু রগচটা স্বভাবের ছিলেন। এই ঘটনায় তার অন্যায় হয়েছে। আজ সালিশে তিনি দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন, হয়তো এই আশঙ্কায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
মন্দির কমিটির সভাপতি দুলাল বণিক বলেন, এই ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না, তবে ঘটনাটি শুনেছি। মন্দিরে অঞ্জলি পতি দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে রান্নার কাজ করে আসছিলেন। এখানে মন্দির নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে নতুন পুরোহিত আসার পরে তার সঙ্গে কিছু সমস্যা হচ্ছিল।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন জানান, পুরোহিত প্রথমে নারী কর্মীর গায়ে হাত তুললে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পুরোহিতের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করে সালিশি বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
Comments