পুলিশি হেফাজতে নারীর মৃত্যু, বিভাগীয় তদন্তের দাবি
গাজীপুরে পুলিশের হেফাজতে ইয়াসমিন বেগম নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ইয়াসমিনের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “পুলিশ দুলাভাইকে না পেয়ে আমার বোনকে নির্যাতন করেছে। যারা আমার বোনকে পিটিয়ে মেরে ফেলল, তারাই কীভাবে তদন্ত করতে পারে! আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
জাহাঙ্গীর অভিযোগ করেন, “বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে আমরা পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে নির্যাতনের কারণ জানতে চেয়েছিলাম। তারা আমাদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে লাঠিচার্জ করে।”
এর আগে মঙ্গলবার ইয়াসমিনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। গাজীপুর মহানগর পুলিশের গোয়েন্দার শাখার উপ-কমিশনার মঞ্জুর রহমান জানান, ইয়াসমিনের কাছে ১২০ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে।
ওইদিনই অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ইয়াসমিনের মৃত্যু হয়। বুধবার রাতে নামাজে জানাজা শেষে রায়েরবাজারে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ইয়াসমিনের দাফন হয়।
পুলিশি হেফাজতে নারীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় বুধবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে গাজীপুর মহানগর পুলিশ। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ইয়াসমিনের ছেলে জিসান বলেন, “নিজেদের রক্ষা করতে পুলিশ আমার মাকে মাদক মামলায় দোষী দেখাতে চাচ্ছে। আমার মায়ের নামে কোনো মামলা নেই। বুধবার দুপুরে তারা আমাদের পরিবারের সবাইকে মাদক মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়েছে।”
জিসান আরও বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চার থেকে পাঁচজন লোক সাদা পোশাকে ভাওয়ালে আমাদের বাড়িতে আসেন। তারা নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ দাবি করেন এবং আমার বাবা আবদুল হাই বাড়িতে আছেন কি না জানতে চান। আমি এবং মা তাদের জানাই— বাবা বাড়িতে নেই। এরপরই তারা আমার মাকে মারধর শুরু করেন এবং ধরে নিয়ে যান। বুধবার আনুমানিক রাত ১১টার দিকে কেউ একজন মোবাইল ফোনে কল করে আমাকে জানান, আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাত ১টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছে আমরা দেখি মা মারা গেছেন। আজ আমরা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।
Comments