বসেছে পদ্মাসেতুর ২৫তম স্প্যান, দৃশ্যমান ৩৭৫০ মিটার
বসানো হয়েছে পদ্মাসেতুর ২৫তম স্প্যান। আজ শুক্রবার শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে সেতুর ২৯ ও ৩০ নম্বর খুঁটির ওপর ‘৫-ই’ নম্বর স্প্যানটি বসানো হয়েছে। দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৩ হাজার ৭৫০ মিটার।
পদ্মাসেতুর উপসহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, আজ সকাল ১০টায় মাওয়ার কুমারভোগের কনস্ট্রাকশন এরিয়া থেকে ভাসমান জাহাজ ‘তিয়ান-ই’ স্প্যানটি নিয়ে জাজিরার উদ্দেশে রওনা দেয়। ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে খুঁটির কাছে পৌঁছে যায়। এরপর থেকে স্প্যানটি খুঁটির ওপর বসানোর কাজ শুরু হয়। দুপুর ৩টা নাগাদ স্প্যানটি খুঁটির ওপর বসানো হয়।
তিনি আরও জানান, নদীর তলদেশের কাজের অগ্রগতি থাকায় দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে পদ্মাসেতুর স্প্যান বসানোসহ অন্যান্য কাজ। এর আগে, গত ২৩ জানুয়ারি ২২তম স্প্যান বসানো হয়। এর ১১ দিন পর ২ ফেব্রুয়ারি ২৩তম স্প্যান, ৯ দিন পর ১১ ফেব্রুয়ারি ২৪তম স্প্যান বসানো হয়। আর নয় দিন পর বসানো হলো ২৫তম স্প্যান।
হুমায়ুন কবির বলেন, “এখন থেকে প্রতি মাসে তিনটি করে স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুর পুরো ৪১টি স্প্যান আগামী জুলাইয়ের মধ্যে বসানো সম্ভব হবে। ফেব্রুয়ারিতেই আরও একটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।”
সূত্র জানিয়েছে, পদ্মাসেতুর ৪২টি খুঁটির মধ্যে ইতোমধ্যে ৩৮টি খুঁটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি চারটি খুঁটির কাজ চলছে। এর মধ্যে ১০ ও ১১ নম্বর খুঁটির কাজ প্রায় শেষ। ২৬ ও ২৭ নম্বর খুঁটির কাজ শুরু হয়েছে।
মাওয়া প্রান্তে সেতুর ১০ নম্বর খুঁটির কাজ চলতি মাসেই শেষ হবে। আর এর পাশে ১১ নম্বর খুঁটির কাজ মার্চের প্রথম সপ্তাহে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। জাজিরা প্রান্তের ২৭ নম্বর খুঁটির কাজ সম্পন্ন হবে মার্চে। এর পাশের ২৬ নম্বর খুঁটির কাজ আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে খুঁটিতে বসানো স্প্যানের নিচে বসানো হচ্ছে রেলওয়ে স্ল্যাব। প্রায় ৩ হাজার স্ল্যাবের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫৭৬টি বসানো হয়েছে। আর রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে ২৮৯টি। ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের মধ্যে ৫৮০টি স্ল্যাব তৈরি বাকি আছে। আর রেলওয়ে স্ল্যাবের সবগুলোই তৈরি হয়ে গেছে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি তৈরি হচ্ছে ৪১টি স্প্যানে। এই ৪১ স্প্যানের ৩৭টিই মাওয়ায় পৌঁছেছে। এগুলোর মধ্যে ২৫টি স্থাপন করা হয়েছে এবং বাকিগুলো স্থাপনের কাজ চলছে।
বাকি চারটি স্প্যানের মধ্যে চীন থেকে আসা দুইটি স্প্যান এখন সমুদ্রপথে রয়েছে। এই দুটি স্প্যান শিগগিরই মাওয়ায় এসে পৌঁছাবে। আর বাকি দুই স্প্যান চীনে রয়েছে। স্প্যান তৈরি শেষ। এখন রংয়ের কাজ চলছে। সেতুতে থাকবে মোট ৪২টি পিয়ার। এর মধ্যে ৩৮টি পিয়ারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন এবং নদীশাসনের কাজ করছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন। এ ছাড়া, দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড।
এখন পর্যন্ত মূল সেতুর কাজ হয়েছে প্রায় ৮৬ শতাংশ। সেতুর সার্বিক অগ্রগতি প্রায় ৭৭ শতাংশ।
Comments