ক্যাথেটার নিয়েই এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে আশিক

ক্যাথেটার নিয়ে পরীক্ষার হলে আশিক বাবু। ছবি: স্টার

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ক্যাথেটার (মূত্র নির্গমনের জন্য দেওয়া বিশেষ ধরনের নল) নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে আশিক বাবু (১৬)। সারা শরীরে ব্যথা, চোখে-মুখে কষ্টের ছাপ, তবুও পরীক্ষা দেওয়া বাদ দেয়নি সে।

আশিক বাবু হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে। সে হাতীবান্ধা এসএস উচ্চ বিদ্যালয় ও টেকনিক্যাল কলেজের কারিগরি শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, পরীক্ষা শুরুর কয়েকদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুরুতর আহত হয় বাবু। তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় মূত্রনালি ও কিডনিতে আঘাত পেয়েছে সে। দ্রুত অপারেশন না করা হলে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হবে তাকে। আর অপারেশনের জন্য প্রয়োজন প্রায় এক লাখ টাকা।

পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশেষ সুবিধায় একাই এক কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছে আশিক বাবু। কখনো বেঞ্চে শুয়ে, কখনো বা পা লম্বা করে দিয়ে বসে লিখছে সে। ছটফট করছে, ক্লান্তির ছাপ মুখে-চোখে কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া বাদ দিচ্ছে না।

পরীক্ষা শেষে আশিক বাবুর সঙ্গে কথা হলে সে জানায়, দুর্ঘটনার কারণে আমি মূত্রনালি ও কিডনিতে আঘাত পেয়েছি। কাটা স্থানে ১৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। দ্রুত অপারেশন করাতে হবে।

“আমার বাবা একজন কৃষক। সামান্য কিছু আবাদি জমি ছাড়া আর কিছুই নেই আমাদের। তাই টাকার অভাবে অপারেশন করাতে পারিনি। কিন্তু স্বপ্ন তো পূরণ করতে হবে, বসে থাকলে চলবে না। তাই ঝুঁকি আছে জেনেও পরীক্ষা দিচ্ছি। আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই,” সে জানায়।

আশিকের বাবা ওমর আলী জানান, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করতে ছেলেকে বলেছি, কিন্তু আমার কথা না শুনে সে পরীক্ষা দিচ্ছে। কষ্ট হলেও বাড়িতেও পড়াশুনা করছে। টাকার অভাবে ছেলের অপারেশন করাতে পারিনি। পরীক্ষার পর আত্মীয়-স্বজনদের দ্বারস্থ হব সহযোগিতার জন্য,” তিনি বলেন।

হাতীবান্ধা এসএস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম জুয়েল জানান, আশিক বাবু অসুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দিচ্ছে। তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।  

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

3h ago