ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ ও ৩১ ধারা কেন অসাংবিধানিক নয়: হাইকোর্ট

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৫ ও ৩১ ধারা কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
supreme court
সুপ্রিম কোর্ট ভবন। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৫ ও ৩১ ধারা কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আইন সচিব, তথ্য সচিবসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদেও চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটের পক্ষে শুনানি করা আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে, গত ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন, মো. আসাদুজ্জামান, মো. জোবাইদুর রহমান, মো. মহিউদ্দিন মোল্লা ও মো. মুজাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল, ড. মো. কামরুজ্জামান ও ড. মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এ রিট করেন।

রিটে চারটি ধারার (২৫, ২৮, ২৯ ও ৩১ ধারা) সাংবিধানিক গ্রহণযোগ্যতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। আইনের এই ধারাগুলো সংবিধানের ৩১ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও উল্লেখ করা হয় রিটে। আদালত শুনানি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ ও ৩১ ধারার বিষয়ে রুল জারি করেন।

আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ, ইত্যাদি সংক্রান্ত ২৫ ধারার (১) উপধারায় বলা হয়েছে “যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে,-(ক) ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে, এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ করেন, যাহা আক্রমণাত্মক বা ভীতি প্রদর্শক অথবা মিথ্যা বলিয়া জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও, কোনো ব্যক্তিকে বিরক্ত, অপমান, অপদস্থ বা হেয় প্রতিপন্ন করিবার অভিপ্রায়ে কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ বা প্রচার করেন, বা (খ) রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণু করিবার, বা বিভ্রান্তি ছড়াইবার, বা তদুদ্দেশ্যে, অপপ্রচার বা মিথ্যা বলিয়া জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও, কোনো তথ্য সম্পূর্ণ বা আংশিক বিকৃত আকারে প্রকাশ, বা প্রচার করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।”

এ ধারার (২) উপধারায় বলা হয়েছে, “যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৩ (তিন) বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।”

উপধারা (৩) এ বলা হয়েছে, “যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয়বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।”

আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো, ইত্যাদির অপরাধ ও দণ্ড সংক্রান্ত ৩১ ধারার (১) উপধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন বা করান, যাহা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বা অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অথবা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় বা ঘটিবার উপক্রম হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

উপধারা (২)-এ বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৭ (সাত) বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

উপধারা (৩)-এ বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ১০ (দশ) বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Further uncertainty over Rooppur plant launch

The construction work for the transmission line through the Padma and Jamuna rivers for the Rooppur nuclear power plant has come to a grinding halt with the ouster of the Awami League government as the Indian contractor has left the site.

9h ago