ভারতের কাছে হেরে বিশ্বকাপ শুরু সালমাদের
শেফালি ভার্মার শুরুর তাণ্ডবে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দিচ্ছিল ভারত। কিন্তু মাঝের ওভারগুলোতে সালমা খাতুন, পান্না ঘোষদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে দেড়শর নিচে আটকে যায় তারা। এরপর ব্যাট হাতে মুর্শিদা খাতুন, নিগার সুলাতানারা অনেকটা সময় পর্যন্ত বাংলাদেশকে রাখেন লড়াইয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পার্থে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ১৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪২ রান তোলে ভারতীয় নারীরা, যা এবারের আসরের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। জবাবে বাংলাদেশের মেয়েরা পুরো ওভার খেলে ৮ উইকেটে ১২৪ রান করে।
বিশ্বকাপের ‘এ’ গ্রুপে শক্তিশালী ভারতের এটি টানা দ্বিতীয় জয়। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে তারা হারিয়েছিল স্বাগতিক ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে।
প্রথম ওভার থেকে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হন ভারতীয় ওপেনার শেফালি। পেসার জাহানারা আলমের পঞ্চম বলে ছয় মেরে রানের খাতা খোলেন তিনি। সালমার করা পরের ওভারেও হাঁকান ছয়। জাহানারার দ্বিতীয় ওভার থেকে দুটি ছয় ও চার আদায় করে নেন শেফালি। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লে শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৫৪ রান।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই অবশ্য সাফল্য পায় বাংলাদেশ। অফ স্পিনার সালমা ফেরান ওপেনার তানিয়া ভাটিয়াকে। ষষ্ঠ ওভারে ভয়ঙ্কর শেফালিকে বিদায় করেন পেসার পান্না ঘোষ। বার দুয়েক হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলেও তৃতীয় প্রচেষ্টায় ক্যাচ লুফে নেন শামিমা সুলতানা। শেফালি ১৭ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৩৯ রান।
শেফালি আউট হওয়ার পর দ্রুত রান তোলার ধারা বজায় রাখতে পারেনি ভারত। দলটির অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউরকেও টিকতে দেননি পান্না। লম্বা সময় উইকেটে থাকা জেমিমা রদ্রিগেস হন রানআউট। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে ৩৪ রান। সালমার বলে লং অনে ক্যাচ দেন রিচা ঘোষ। দীপ্তি শর্মাও হন রানআউট।
শেষভাগে ভেদা কৃষ্ণমূর্তির কল্যাণে দেড়শর কাছাকাছি পৌঁছায় ভারত। সাতে নেমে ১১ বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়ক সালমা ও পান্না ২টি করে উইকেট পান।
লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে আউট হয়ে যান শামিমা সুলতানা। এরপর ৩৯ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে চাপ সামলে নেয় বাংলাদেশ। এই জুটি ভাঙেন ভারতের পেসার অরুন্ধতি রেড্ডি। দারুণ খেলতে থাকা মুর্শিদাকে ফেরান তিনি। ২৬ বলে ৪ চারে ৩০ রান করেন এই বাঁহাতি ওপেনার।
মন্থর গতিতে খেলতে থাকা সানজিদা ইসলাম লেগ স্পিনার পুনম যাদবের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ফারজানা হক খুলতে পারেননি রানের খাতা। তবে একপ্রান্ত আগলে বাংলাদেশকে টানতে থাকেন নিগার, এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান দেখাতে শুরু করেন স্বপ্ন।
শেষ চার ওভারে জয়ের জন্য মেয়েদের দরকার ছিল ৪০ রান। হাতে ছিল ৫ উইকেট। তবে ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে নিগার অরুন্ধতির হাতে ক্যাচ দিলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যায়। ফাহিমা খাতুন, জাহানারা, রুমানা আহমেদরা দুই অঙ্কে পৌঁছালেও দলকে লক্ষ্যে নিতে পারেননি।
বাংলাদেশের পক্ষে ২৬ বলে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন নিগার। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার। ভারতের হয়ে পুনম ১৮ রানে নেন ৩ উইকেট। দুই পেসার শিখা পান্ডে ও অরুন্ধতি পান ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৪২/৬ (তানিয়া ২, শেফালি ৩৯, জেমিমা ৩৪, হারমানপ্রিত ৮, দীপ্তি ১১, রিচা ১৪, ভেদা ২০*, শিখা ৭*; জাহানারা ০/৩৩, সালমা ২/২৫, নাহিদা ০/৩৪, পান্না ২/২৫, রুমানা ০/৮, ফাহিমা ০/১৬)
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৪/৮ (শামিমা ৩, মুর্শিদা ৩০, সানজিদা ১০, নিগার ৩৫, ফারজানা ০, ফাহিমা ১৭, জাহানারা ১০, রুমানা ১৩, সালমা ২*, নাহিদা ২*; দীপ্তি ০/৩২, শিখা ২/১৪, রাজেশ্বরী ১/২৫, অরুন্ধতি ২/৩৩, পুনম ৩/১৮)।
Comments