করোনাভাইরাস: এক বাংলাদেশির চোখে সিউল পরিস্থিতি
কোভিড-১৯ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তাদের কোরিয়া পরিস্থিতি জানিয়েছেন। রাজধানী সিউলে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এম এন ইসলাম। কোরোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আজ দ্য ডেইলি স্টার তার সঙ্গে কথা বলে।
তিনি জানান, সিউল থেকে দূরবর্তী শহর দেগুর ধর্মীয় উপাসনালয়ে যাতায়াতকারীদের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণের খবরে সারা কোরিয়াতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একটু পর পর ফোনের স্ক্রিনে সরকারি বার্তা পাঠানো হচ্ছে। অনেক সময় যা কিছুটা ভীতিকর।
“গতকাল সারাদিন বাসায় অনেকদিন পর টিভির স্ক্রিনে মনোযোগ ছিল। চোখ ফেরে না, আপডেট দেখি। বিদগ্ধজনের আলোচনা-সমালোচনা শুনি এক অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বলছিলেন, প্রকৃতিগতভাবেই কোরিয়ানরা কাজপাগল। শতপ্রতিকূলতার মাঝেও কাজ এগিয়ে নিতে হবে, মানে কর্মস্থলে থাকতেই হবে”, বলছিলেন এম এন ইসলাম।
তিনি জানান, আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৭টায় বৃষ্টির সিউল শহরে উপচেপড়া গাড়ির ভীড়ে ২০ কি.মি যেতে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগে তার। বোঝাই যায়, কর্মব্যস্ত সিউলে গণপরিবহন কিছুটা এড়িয়েছে নগরবাসী। অফিসে যাওয়ার আগে সিটি হল এলাকায় মানুষের ভীড় মনে হয়নি। তিনি জানান, এই জনপদের অন্য একটি শহর করোনাভাইরাসের কারণে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।
সেখানকার বাংলাদেশিদের কী অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুটা আতঙ্ক তো আছেই। সবার মধ্যেই একধরনের শঙ্কা কাজ করছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে এসব নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক আছে বলে জানান তিনি।
কোরানাভাইরাসের মতো সংবেদনশীল ছোঁয়াচে ভাইরাস নিয়ে আরো বেশি সতর্কতা নিয়ে চলা হয়তো উচিত জানিয়ে এম এন ইসলাম জানিয়েছেন, সরকারি নানা কাজের সমালোচনা করলেও কোরিয়ানরা কিন্তু প্রতিদিনের মতো স্বচ্ছন্দ-গতিময়তায় ব্যস্ত জীবনে। অফিসের কাজের ফাঁকের আড্ডার জায়গাতেও কোনো কমতি নেই।
“ভীড়ে লিফটে ওঠা নারীদের মাস্কবিহীন মুখের হাসিতেও মনে হয়নি এ জাতি কতটা আতঙ্কিত। এদের মনোবল অটুট, এটি বিশাল শক্তি”, বলেন ইসলাম।
Comments