দিল্লি সহিংসতা রোধে সরকারের চেষ্টার অভাব ও পুলিশের সক্ষমতা নিয়ে অমর্ত্য সেনের উদ্বেগ

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে চার দিন ধরে চলা সহিংসতার পর এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে দিল্লির পরিস্থিতি।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। ছবি: সংগৃহীত

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে চার দিন ধরে চলা সহিংসতার পর এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে দিল্লির পরিস্থিতি।

সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪২ জন, আহত হয়েছেন কয়েকশ। ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির বহু ঘরবাড়ি, দোকান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। সহিংসতায় সেখানকার মানুষের গোছানো, স্বাভাবিক জীবন তছনছ হয়ে গেছে। স্বজন হারিয়ে আহাজারি করছে নিহতদের পরিবার। এ ছাড়া, এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।

রাজধানীর মতো জায়গায় এ ধরনের সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় গতকাল শনিবার এক অনুষ্ঠানে দেশের গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮’র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আমি খুবই উদ্বিগ্ন যে এমন একটা শহর, যা দেশের রাজধানী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে রয়েছে, সেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হয় কী করে? পুলিশ আটকাতে পারে না? নাকি প্রয়োজনীয় চেষ্টা করে না? এটিই যদি হয়, তাহলে দুশ্চিন্তার যথেষ্ট কারণ আছে।’

‘এটা তো সত্য, যারা মার খাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই মুসলমান ও সংখ্যালঘু৷ ভারতবর্ষ একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেখানে এরকম একটা পার্থক্য যদি তৈরি হয় এবং তা চলতে থাকে, তাহলে অবশ্যই আমাদের দুশ্চিন্তা করার অনেক কারণ আছে।’ যোগ করেন তিনি।

‘সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে, পুলিশ আটকাতে পারছে না’— এ মন্তব্য করে পুলিশের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অমর্ত্য সেন।

সহিংসতায় দিল্লি সরকারের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি চেষ্টার অভাব কিংবা পুলিশের অক্ষমতার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো আমাদের বিচার করতে হবে। আমি নানা বিষয়ে বিচার না করেই কথা বলার পক্ষে নই।’

সহিংসতা নিয়ে সরকারের সমালোচনা করায় দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতিকে বদলি করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই নিয়ে তো আলোচনা হচ্ছে। যাকে সরানো হয়েছে তাকে আমি চিনি এবং কী কারণে সরানো হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। যখন তিনি বিচার করে জনগণকে সাহায্যের চেষ্টা করছেন, সেই সময় কেন তাকে সরানো হলো? সব দিক বিচার না করে অবশ্য আমি এর জবাব দিতে পারব না।’

‘ভারতবর্ষে গণতন্ত্র এখন কোন পর্যায়ে?’— প্রশ্নের জবাবে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা যদি বন্ধ হয়, কেউ বিপরীত মত প্রকাশ করলে যদি তার কণ্ঠ রোধ করা হয়, তাহলে বুঝতে হবে নিশ্চয়ই গণতন্ত্র ঘাটতিতে পড়ছে। গতন্ত্রের অন্য দিকটা নির্বাচন৷ সেই নির্বাচনে নানা দলের আর্থিক ব্যবধান গণতন্ত্রের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর, সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তা করার কারণ আছে।’

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago