তামিমের দ্বাদশ ওয়ানডে সেঞ্চুরি
এদিন যেন ভিন্ন পণ করেই নেমেছেন ওপেনার তামিম ইকবাল খান। সাম্প্রতিক সময়ে তাকে নেওয়া হওয়া সব সমালোচনার উপযুক্ত জবাব ব্যাট হাতে দেওয়ার তাগিদ অনুভব করেছেন। আর করেছেন দারুণ ভাবে। সমালোচনার তীব্র চাপ উপেক্ষা করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি তুলে নিলেন এ ব্যাটসম্যান। আর সেঞ্চুরিটি তুলে নিয়েছেন স্ট্রাইক রেট প্রায় একশর কাছাকাছি রেখেই। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটা তামিমের দ্বাদশ সেঞ্চুরি।
মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই বেশ সাবলীল ব্যাট করছেন তামিম। ৪২ বলে ফিফটি স্পর্শ এ ওপেনার ১০৬ বলে শতরানের কোটা পূরণ করেন। এ রান করতে অসাধারণ কিছু শট খেলেছেন তিনি। বাউন্ডারি মেরেছেন ১০টি। অবশ্য ফিফটি স্পর্শ করতেই ১০টি বাউন্ডারি মেরেছিলেন। এরপর কিছুটা দেখে শুনে ব্যাট করেছেন তিনি। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার সংগ্রহ ১০১ রান। এ সময় বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৩৭ ওভারে ৩ উইকেটে ২০০ রান। তামিমের সঙ্গে ব্যাট করছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াল। ব্যাট করছেন ২৫ রানে।
বেশ কিছু দিন থেকেই তামিমের স্ট্রাইক রেট নিয়ে নানা সমালোচনা হয়ে আসছিল। অথচ ক্যারিয়ার যখন শুরু করেছিলেন তখন দেশের মারকুটে ব্যাটসম্যানদের অন্যতম ছিলেন তিনি। বয়স ও অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগ্রাসীভাব কমিয়ে কিছুটা দায়িত্ব নিয়ে খেলার চেষ্টা করছেন এ ওপেনার। তাই মাঝে মধ্যে কিছুটা ধীর গতিতেও ব্যাট করে থাকেন। আর তাতে প্রায়ই সমালোচনাও শুনতে হয়। তবে এদিন সব সমালোচনার জবাব ব্যাট হাতেই দিলেন তামিম।
পাশাপাশি অনন্য মাইলফলকে পা রেখেছেন তামিম। প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে সংস্করণের ক্রিকেটে সাত হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি। মাঠে নামার আগে এ মাইলফলক থেকে ৮৬ রান দূরে ছিলেন এ ওপেনার। ২৮তম ওভারের পঞ্চম বলে ওয়েসলি মাধেভেরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে নতুন উচ্চতায় নাম লেখা তিনি।
এছাড়া এদিন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে সংস্করণে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তামিম। আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় থাকা সাকিব আল হাসানকে টপকে গিয়ে দখল করেছেন শীর্ষস্থান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৫ ওয়ানডের ৪২ ইনিংসে বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিবের সংগ্রহ ১ হাজার ৪০৪ রান। এদিন ব্যাট হাতে মাঠে নামার আগে তামিম তার চেয়ে মাত্র ২ রানে পিছিয়ে ছিলেন। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে চার মেরে সাকিবকে ছাড়িয়ে যান তামিম।
তবে শান্তর রানআউটে বড় দায় রয়েছে তামিমের। মাধেভেরের লেগ স্টাম্পে রাখা বলটি ঠিকভাবে খেলতে পারেননি শান্ত। রান নিতে চাননি। কিন্তু তামিম চেয়েছিলেন। উইকেট ছেড়ে প্রায় অন্য প্রান্তে চলে আসেন। তাই বাধ্য হয়েই নিজের উইকেট স্যাক্রিফাইস করেন এ তরুণ। এর আগে লিটনের আউটেও তার হাত রয়েছে। যদিও পুরোটাই দুর্ভাগ্যজনক।
কার্ল মুম্বার করা সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলটি ড্রাইভ করেছিলেন তামিম। বোলার নিজেই ফিরতি বল ধরতে গেলে তার হাতে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। ওইদিকে রান নিতে উইকেট ছেড়ে বেরিয়েছিলেন লিটন। ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। আগেই স্টাম্প ভাঙলে রানআউট হয়ে ফিরতে হয় লিটনকে। তার বিদায়ে ভাঙে ৩৮ রানের ওপেনিং জুটি। আউট হওয়ার আগে ১৪ বলে ৯ রান সংগ্রহ করেছেন এ ওপেনার। এ রান করতে দুটি দর্শনীয় চার মেরেছেন তিনি।
এ দুই রানআউটের পর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে দারুণ একটি জুটি গড়েছিলেন তামিম। ৮৭ রানের জুটিতে দলকে সংগ্রহের পথে নিয়ে যান তারা। তবে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। এরপর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দলের হাল ধরেছেন তামিম।
Comments