তামিমের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বড় সংগ্রহ

tamim iqbal
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলছেন প্রায় ১৪ বছর হয়। চাপ জয় করার ক্ষমতা শিখেছেন আগেই। তারপরও সাম্প্রতিক সময়ে তাকে ঘিরে সমালোচনাটা ছিল যেন অনেক বেশিই। তাও উতরে গেলেন সহজেই। সব চাপ জয় করে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলেই যেন সবকিছুর জবাব দিলেন তামিম ইকবাল। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের কল্যাণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজে টিকে থাকতে হলে ৩২৩ রান করতে হবে সফরকারীদের।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (৩ মার্চ) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩২২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যাচেই সে রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল টাইগাররা। আর এর সবটাই সম্ভব হয়েছে তামিমের সৌজন্যে। তার ১৫৮ রানের ইনিংসটি ওয়ানডেতে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যেও সর্বোচ্চ। তবে সংগ্রহটা আরও বড় হতে পারত। কারণ তামিমের বিদায়ের পর ২৬ বলে আরও ৩টি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩০ রান যোগ করতে পেরেছে বাংলাদেশ।

এদিন শুরু থেকেই দারুণ ব্যাট করতে থাকেন তামিম। সঙ্গী লিটন কুমার দাসও ছিলেন সাবলীল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে যান লিটন। কার্ল মুম্বার করা সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলটি ড্রাইভ করেছিলেন তামিম। বোলার নিজেই ফিরতি বল ধরতে গেলে তার হাতে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। ওইদিকে রান নিতে উইকেট ছেড়ে বেরিয়েছিলেন লিটন। ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। আগেই স্টাম্প ভাঙলে রানআউট হয়ে ফিরতে হয় লিটনকে।

তবে নাজমুল হোসেন শান্তর রানআউটে দায় ছিল তামিমের। ওয়াসলি মাধেভেরের লেগ স্টাম্পে রাখা বলটি ঠিকভাবে খেলতে পারেননি শান্ত। রান নিতে চাননি। কিন্তু তামিম চেয়েছিলেন। উইকেট ছেড়ে প্রায় অন্য প্রান্তে চলে আসেন। তাই বাধ্য হয়েই নিজের উইকেট স্যাক্রিফাইস করেন এ তরুণ।

দুই রানআউটের পর অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন তামিম। গড়েন ৮৭ রানের দারুণ এক জুটি। তবে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ১০৬ রানের জুটিতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর শেষ দিকে মোহাম্মদ মিঠুনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৩২২ রানের বড় সংগ্রহই পায় বাংলাদেশ।

১৫৮ রানের ইনিংসটি ১৩৬ বলে খেলেছেন তামিম। ১০৬ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করা তামিম নিজের ইনিংসে চার মেরেছেন ২০টি। ফিফটি করতেই অবশ্য ১০টি চার মেরেছিলেন তিনি। আছে ৩টি ছক্কাও। সেঞ্চুরি করার পরই ছক্কাগুলো মেরেছেন তিনি। দারুণ ব্যাট করেন মুশফিকও। ৫০ বলে ৬টি চারে করেন ৫৫ রান। মাহমুদউল্লাহ খেলেন কার্যকরী ৪১ রানের ইনিংস। আর শেষ দিকে মোহাম্মদ মিঠুনের ১৮ বলে ৩২ রানের ইনিংস জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নতুন রেকর্ড গড়তে পারে বাংলাদেশ।

এদিন অনন্য এক মাইলফলকেও পা রেখেছেন তামিম। প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে সংস্করণের ক্রিকেটে সাত হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি। মাঠে নামার আগে এ মাইলফলক থেকে ৮৬ রান দূরে ছিলেন এ ওপেনার। ২৮তম ওভারের পঞ্চম বলে ওয়েসলি মাধেভেরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে নতুন উচ্চতায় নাম লেখা তিনি।

এছাড়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের তো বটেই ওয়ানডে সংস্করণে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তামিম। এর আগে তাদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান ছিল ক্যারিবিয়ান তারকা ক্রিস গেইল। আর বাংলাদেশীদের মধ্যে ছিল সাকিব আল হাসানের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৫ ওয়ানডের ৪২ ইনিংসে বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিবের সংগ্রহ ১ হাজার ৪০৪ রান। এদিন ব্যাট হাতে মাঠে নামার আগে তামিম তার চেয়ে মাত্র ২ রানে পিছিয়ে ছিলেন। তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে চার মেরে সাকিবকে ছাড়িয়ে যান তামিম। আর আউট হওয়ার আগের বলে ছাড়ান গেইলকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩২২/৮ (তামিম ১৫৮, লিটন ৯, শান্ত ৬, মুশফিক ৫৫, মাহমুদউল্লাহ ৪১, মিঠুন ৩২*, মিরাজ ৫, মাশরাফি ১, তাইজুল ০, শফিউল ৫*; মুম্বা ২/৬৪, টিশুমা ১/৩৫, টিরিপানো ২/৫৫, মাধেভেরে ১/৩৮, রাজা ০/৫৯, উইলিয়ামস ০/৩৫, মুটমবোডজি ০/৩৪)।

Comments

The Daily Star  | English

What we expect from a people-centric health budget

We must strongly advocate for a people-centric health budget.

8h ago