বায়ুদূষণে গড় আয়ু কমেছে ৩ বছর
বায়ুদূষণের কারণে সারাবিশ্বে মানুষের গড় আয়ু প্রায় তিন বছর কমেছে। অকালে মারা যাচ্ছে প্রায় ৮৮ লাখ মানুষ। মঙ্গলবার, আন্তর্জাতিক জার্নাল কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণায়, বায়ুদূষণকে ‘মহামারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেল, গ্যাস, কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উৎপন্ন দূষণ সৃষ্টিকারী কণার প্রভাব মানুষের ফুসফুসে প্রায় এক বছর পর্যন্ত থাকতে পারে।
গবেষণার প্রধান লেখক জস লেলিয়েভেল্ড বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের উপর বায়ু দূষণের প্রভাব ধূমপানের চেয়েও ক্ষতিকর। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে এই ক্ষতি কমানো সম্ভব।’
মহামারীর তুলনায় বায়ু দূষণেই বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। ম্যালেরিয়ার তুলনায় ১৯ গুণ এবং এইডসের তুলনায় প্রায় নয় গুণ বেশি মানুষ বায়ু দূষণের কারণে অকালে মারা যাচ্ছেন। বায়ু দূষণ থেকে কেবল ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে প্রায় ছয় শতাংশ মানুষ। এর প্রভাবে ফুসফুসের অন্যান্য রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অন্যান্য মহাদেশের তুলনায় এশিয়ায় বায়ু দূষণের মাত্রা বেশি। বায়ু দূষণের কারণে চীনে ৪ দশমিক ১, ভারতে ৩ দশমিক ৯ এবং পাকিস্তানে ৩ দশমিক ৮ বছর গড় আয়ু কমেছে।
ধনী দেশগুলোর তুলনায় দরিদ্র দেশে বায়ু দূষণের মাত্রা বেশি। যুক্তরাষ্ট্র, উত্তর ও পশ্চিম ইউরোপ এবং দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোতে বায়ু দূষণ তুলনামূলকভাবে কম। ধনী দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার রোমানিয়া, বুলগেরিয়া এবং হাঙ্গেরিতে সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণ হয়।
গবেষক টমাস মাঞ্জেল বলেন, ‘প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অকাল মৃত্যুর জন্য মূলত মানবসৃষ্ট দূষণই দায়ী। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে বছরে প্রায় ৫৫ লাখ মানুষকে অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব।’
Comments