ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় থামছে না করোনার বিস্তৃতি

অজুহাত নয় জোরালো ব্যবস্থা নিন: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

Corona China
চীনের হুবেই প্রদেশে কোরোনা আক্রান্ত এক মায়ের সন্তানকে পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক। ছবি: সংগৃহীত

চীনের উহান প্রদেশ থেকে ধীরে ধীরে নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এখন সব মহাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনোভাবেই এর বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত অন্তত ৯৬ দেশে করোনার বিস্তার ঘটেছে।

এই ভাইরাস ঠেকাতে সরকারগুলোকে অজুহাত না দেখিয়ে আরও জোরালো ব্যবস্থা নিতে হবে বলে সর্তক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আদহানম ঘিব্রেইয়েসুস গতকাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘মহড়ার প্রস্তুতি নিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা যাবে না। সরকারগুলোকে আরও গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিতে হবে।’

তিনি মনে করেন, সফলভাবে করোনা মোকাবেলা করার ক্ষমতা সরকারগুলোর আছে। কিন্তু, মানবজাতির জন্যে করোনা যে ধরনের হুমকি সৃষ্টি করেছে তা মোকাবেলা করতে কোনো কোনো দেশের রাজনৈতিক সদিচ্ছা তেমন দেখা যাচ্ছে না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদনে আজ শুক্রবার বলা হয়েছে, সারা পৃথিবীতে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা যখন ১ লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক এমন হুশিয়ারি বার্তা দিলেন।

ড. টেড্রোস বলেছেন, ‘এটি কোনো মহড়া নয়। হাল ছেড়ে দেওয়ার সময় এখন না। কোনো অজুহাত দেখানোরও সুযোগ নেই। এখন সময় এর বিস্তার ঠেকানো। দেশগুলো এমনভাবে পরিকল্পনা করছে যেন এ নিয়ে যুগের পর যুগ কাজ করা যাবে।... সরকারের প্রতিটি বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে যৌথভাবে করোনার মোকাবেলা করতে হবে।’

আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও

চীনের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনার হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করা যাচ্ছে না। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে আজ বলা হয়েছে, চীনের শেনঝেন শহরে আক্রান্তদের ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ বছরের কম বয়সী শিশু ও সাধারণ জনগণ প্রায় সমান হারে আক্রান্ত হচ্ছেন।

জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, উহান প্রদেশে নতুন করে ১২৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২৯ জন। এ নিয়ে প্রদেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩১ এ।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৮৩ জন। তাদের মধ্যে চীনে মারা গেছেন ৩ হাজার ৪২ জন, ইতালিতে ১৪৮ জন, ইরানে ১০৭ জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪২ জন, ফ্রান্সে ৭ ও জাপানে ৬ জন।

‘জাপানে আক্রান্তের সংখ্যা ধারণারও বাইরে’

গবেষকরা বলছেন, জাপানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যা বলা হচ্ছে তা ‘হিমশৈলের চূড়া মাত্র’। দেশটিতে আক্রান্তর হার প্রতিদিন বাড়ার পরও তা ঠেকাতে সরকারের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত বুধবার জাপানে নতুন করে ৩৩ জনের আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে একদিনে এটিই ছিল সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্তের ঘটনা। সরকারি হিসাবে, জাপানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

কিন্তু, সরকারের সেই হিসাবের চেয়ে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। জাপানের বেসরকারি সংস্থা মেডিকেল গভর্নেন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান মাসাহিরো কামি বলেছেন, জাপানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যা বলা হচ্ছে তা ‘হিমশৈলের চূড়া মাত্র’।

সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের উত্তরে হোক্কাইদো দ্বীপের গভর্নর রাজ্যটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। দ্বীপটিতে এখন পর্যন্ত ৮০ জন আক্রান্ত হওয়ার কথা সরকারিভাবে স্বীকার করা হলেও মোট আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। হোক্কাইদো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিরোশি নিশিউরা বলেছেন, দ্বীপটিতে আক্রান্ত সংখ্যা সরকারি হিসাবের তুলনায় অন্তত ১০ গুণ বেশি।

Comments

The Daily Star  | English
Rizvi criticizes PR system in elections

PR system a threat to democracy: Rizvi

Under the PR system, the party, not the people, will choose MPs, he says

4h ago