মাশরাফির চোখে কোহলির মতই চোখ ধাঁধানো লিটন

২০১৫ সালে মাশরাফি মর্তুজার নেতৃত্বেই ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল লিটন দাসের। এই ফরম্যাটে ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় মাশরাফির নেতৃত্বেই খেলেছেন তিনি। সেই অধিনায়কের বিদায়ের দিনে লিটন খেললেন ইতিহাস গড়া ১৭৬ রানের ইনিংস। লিটনের ব্যাটিং বরাবরই চোখের প্রশস্তি বাড়িয়ে দেয়। মাশরাফির সেটা দেয় কয়েগুণ। তার কাছে দৃষ্টিসুখকর ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দুটো নাম- বিরাট কোহলি আর লিটন দাস।
শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছিল অধিনায়ক মাশরাফির শেষ ম্যাচ। অধিনায়ককে জয়ের মালা পাইয়ে দিতে এই ম্যাচে লিটন খেলেন ১৪৩ বলে ১৭৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। ১৬ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৮ ছক্কা। বাংলাদেশের হয়ে তামিম ইকবালের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫৮ রানের রেকর্ড ভেঙে উঠেছেন নতুন চূড়ায়। রেকর্ড বই উলট পালট হয়েছে। ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮ ছক্কা। তামিমের সঙ্গে জুটিতে ২৯২ রানের দেশিয় রেকর্ড। সবই এসেছে এক দিনে।
একই ম্যাচে তামিম অপরাজিত ১২৮ রান করলেও লিটনের তাণ্ডবে তিনি পড়ে যান আড়ালে। ম্যাচ শেষে তরুণ লিটনকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন মাশরাফি। লিটনকে পাশে বসিয়েই অধিনায়ক জানান নান্দনিক ব্যাটিংয়ের শৈলীতে লিটন তার কাছে কতটা বড় নাম, ‘আমার মনে হয় লিটন একটা জিনিস জানে, আমি ওরে সব সময় বলি। আমার দুজন ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং সব সময় দেখতে ভালো লাগে। একটা হচ্ছে বিরাট কোহলি, আরেকটা হচ্ছে লিটন। অনেকে রান করে, অনেকে ভালো খেলোয়াড় আছে। কিন্তু ও যতক্ষণ উইকেটে থাকে দেখতে ভালো লাগে। লিটনকে এটা অনেক আগে থেকে বলে আসছি।’
‘আমি সব সময় বিশ্বাস করি লিটন শুধু উইকেটে থেকে খেলা সেটা না, লিটন মোমেন্টাম বদলে দিতে পারে। লিটন উইকেটে থাকতে পারে, লিটন বড় ইনিংস খেলতে পারে। সবই পারে।’
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগলেও, সম্প্রতি বেশ ধারাবাহিক তার ব্যাট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজেই পেয়ে গেলেন দুই সেঞ্চুরি। গত ৯ ইনিংসে সেঞ্চুরির হাতছানি ছিল আরও দুবার।
মাশরাফির তাই মনে হচ্ছে, নিজের খেলাটা বুঝতে শুরু করেছেন লিটন, পাচ্ছেন তাল, ‘আমার বিশ্বাস যে এখন এটা সে পিক করতে পেরেছে। ওর খেলাটা এখন খুব সুন্দর ওর মাথায় চলে এসেছে। আমি মনে করি লিটনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিপক্বতা হয়ে গেছে। মনে হয় চার বছর খেলে ফেলেছে। পরশু দিনও বলছিলাম ওর পিক টাইম রান করার। আমার বিশ্বাস যে এখন ও রান করবে।’
‘ভারতের সঙ্গে যে সেঞ্চুরিটা করেছিল এশিয়া কাপে। আমি মনে করি ওটা তার স্বাভাবিক খেলা। আমি এটা প্রায়ই বলি ওকে।’
মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচে লিটন-তামিমের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪৩ ওভারে কমে আসা ম্যাচে ৩২২ রান করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ২১৮ রানে গুটিয়ে ডি/এল মেথডে ১২৩ রানে হেরেছে তারা।
Comments