কোটি টাকার প্রকল্পে নলকূপ স্থাপন, ৪ মাস পরই অকেজো

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় কোটি টাকার প্রকল্পে স্থাপন করা নলকূপ চার মাস পার হতেই অকেজো হয়ে গেছে। অধিকাংশ নলকূপ থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
Bandarban_Deep_Tubewel_Public_Health
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় কোটি টাকার প্রকল্পে স্থাপন করা নলকূপ চার মাস পার হতেই অকেজো হয়ে গেছে। ছবি: স্টার

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় কোটি টাকার প্রকল্পে স্থাপন করা নলকূপ চার মাস পার হতেই অকেজো হয়ে গেছে। অধিকাংশ নলকূপ থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য ২০১৯ সালের মে মাসে নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ‘সেইফ ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট’ নামে ওই প্রকল্পে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে ৫০টি ডিপ টিউবওয়েল ও ৪৩টি রিং টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়।

বণিকপাড়ার বিউটি ধর বলেন, স্থাপনের পর চার মাস পর্যন্ত নতুন ডিপ টিউবওয়েলটি ঠিক ছিল। এখন আর পানি পাওয়া যায় না।

আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া, থানাপাড়া, ছাবের মিয়াপাড়া, পানবাজার, উত্তর পালংপাড়া, বণিকপাড়া, আমতলিপাড়া, ভারত মোহনপাড়া, রোয়াম্বো, দক্ষিণ পালংপাড়া, রেপারপাড়া, যোগেন্দ্রপাড়া, তারাবনিয়া, বাঘের ঝিরিসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় এক শ নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা। পুরো জেলায় স্থাপন করা হয়েছে সাড়ে সাত হাজার নলকূপ।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নতুন টিউবওয়েল এখন অকেজো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলীকদম উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. কফিল উদ্দিন বলেন, ‘নলকূপগুলো অকেজো হয়ে যাওয়ায় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী নদী, খাল ও ঝিরির পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন।’

চার মাস পরই অকেজো হয়ে যাওয়া ডিপ টিউবওয়েলটির ব্যাপারে বণিকপাড়ার অপু ধর বলেন, ‘ওই ডিপ টিউবওয়েলটি বসানোর জন্য জনস্বাস্থ্য উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা গত বছরের শুরুতে আমাদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন।’

পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে নতুন স্থাপন করা কিছু কূপ অকেজো হয়ে পড়েছে বলে জানান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মনির আহমেদ।

নলকূপ স্থাপনের জন্য স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারি সহায়ক চাঁদা হিসেবেই প্রতিটি কূপের জন্য সাত হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে পানির স্তর অনেক উপরে থাকে, তাই সহজেই নলকূপ থেকে পানি পাওয়া যায়। বর্ষা শেষ হওয়ার পরই নলকূপগুলো অকেজো হয়ে যায়।’

আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়ার মো. জয়নাল বলেন, দুর্নীতি করতেই ঠিকাদার ও প্রকৌশলী বর্ষা মৌসুমে কাজ করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাবুপাড়ার হ্লামাও মারমা বলেন, আমাদের এলাকায় দুটি রিং টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল। দুটিই অকেজো হয়ে গেছে। ফলে তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago