নবীনদের হলে আসন না দেওয়ায় জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে আসন বরাদ্দ না দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল থেকে মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল ঘুরে শেখ হাসিনা হলের সামনে এসে শেষ হয়।
আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী সারাদেশ থেকে নবীণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন।
আসন বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব নয় বলে নোটিশে উল্লেখ করে হলে শিক্ষার্থীদের হলের বাইরে নিজেদের আনা কাঁথা-বালিশ ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে অবস্থান নেন।
সমাবেশে বিশ্বদ্যিালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মিখা পিরেগু বলেন, ‘১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী এটি একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু সিন্ডিকেট কর্তৃক একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৭৩’র অধ্যাদেশের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে। নবীন শিক্ষার্থীদের এ রকম ভোগান্তির তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, নবীন শিক্ষার্থীদের আজকের এই অবস্থায় আমরা বিশ্ববিদ্যালের পক্ষ থেকে লজ্জা প্রকাশ করছি। আমরা তিনটি দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছিলাম, সেখানে প্রশাসন দুটি দাবি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এখনো তারা দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেনি। নবীন শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তিতে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আজকের মধ্যে যদি হল প্রভোস্টরা নবীন শিক্ষার্থীদৈর হলে প্রবেশ করতে না দেন, তাহলে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
মো. খাইরুল আলম কুমিল্লা থেকে মেয়েকে হলে উঠিয়ে দিতে এসেছেন। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের সামনে এসে জানতে পারেন যে, হলে নবীণদের থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। আগে থেকে এসএমএস কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়নি।
খাইরুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ কেমন অব্যবস্থাপনা! সিট তো দেবেই না, আবার গণরুমে রাখার ব্যাপারেও কোনো উদ্যোগ নেই। সকালে বলেছে, একটু পরে হলে উঠাবে। কিন্তু সেই একটু পরে আর শেষ হয় না। প্রশাসনের এই আচরণে রীতিমতো বিরক্ত আমরা। আমাদের সন্তানেরা কি শিখবে তাহলে!’
প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী আয়েশা নওশীন বলেন, আবাসিক বিশ্ববিদ্যলয়ে ভর্তি হতে পেরে খুশি হয়েছিলাম। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে লক্ষ্মীপুর থেকে এসেছেন তিনি। কিন্তু এসে থাকার কোনো নিশ্চয়তা দেখছি না। বসে আছি শেখ হাসিনা হলের সামনে।
নওশীনের বাবা সোলাইমান বলেন, ‘সকাল থেকে হলের সামনে এসে বসে আছি। কিন্তু হল প্রশাসনের কোনো কর্তাব্যক্তির দেখা পাইনি। একজন গার্ড হলের সামনে তথ্য ফরম নিয়ে বসে আছেন। সেই ফরম পূরণ করে বসে আছি। জানি না কী হবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা হল ও প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা বেশ আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ও হলের নোটিশ বোর্ডে আসন বরাদ্দ দিতে না পারার বিষয়টি উল্লেখ করেছি। আমার জানা মতে, এসএমএস-এর মাধ্যমেও জানানো হয়েছে। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছয়টি আবাসিক বাসা ছাত্রীদের জন্য খালি করে রেখেছে। সেখানে কিছু শিক্ষার্থীদের উঠানো হবে।
Comments