জিম্বাবুয়ের এই রান যেন তুড়ি মেরেই উড়িয়ে দিলেন লিটন

বোলাররাই কাজটা করে দিয়েছিলেন সহজ। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে হাঁসফাঁস করা জিম্বাবুয়ে করতে পারল না ১২০ রানও। নাঈম শেখকে নিয়ে দারুণ শুরুর পর দুরন্ত ছন্দে থাকা লিটন দাস ওই রান যেন তুড়ি মেরেই উড়িয়ে দিলেন।
Liton Das
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বোলাররাই কাজটা করে দিয়েছিলেন সহজ। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে হাঁসফাঁস করা জিম্বাবুয়ে করতে পারল না ১২০ রানও। নাঈম শেখকে নিয়ে দারুণ শুরুর পর দুরন্ত ছন্দে থাকা লিটন দাস ওই রান যেন তুড়ি মেরেই উড়িয়ে দিলেন।

বুধবার (১১ মার্চ) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়েকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টানা দ্বিতীয় ফিফটিতে দলকে জিতিয়ে ৪৫ বলে ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন লিটন। ২৫ বল হাতে রেখেই ম্যাচ বের করে নেয় বাংলাদেশ। 

অনায়াসে এই জয়ে একতরফা এক সিরিজেরও হয়েছে ইতি। একমাত্র টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জেতার পর ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করা। শেষটায় টি-টোয়েন্টিতেও সফরকারীদের একই হাল করে ছেড়েছে মাহমুদউল্লাহর দল। এই প্রথম তিন ফরম্যাটের কোনো সিরিজের সবগুলো ম্যাচই জিতল বাংলাদেশ।

মামুলি লক্ষ্য। ওভারপ্রতি দরকার কেবল ৬ রান। তামিম ইকবালের বিশ্রামে লিটন দাসের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন নাঈম। জিম্বাবুয়ের জন্য সেটা কোনো সুখকর বার্তা হয়নি।

নির্বিষ বোলিংয়ে অনায়াসে রান করতে থাকেন লিটন-নাঈম। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারেই বিনা উইকেটে স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৪৪। ম্যাচ কত দ্রুত শেষ হয় সেটাই যেন দেখার প্রতীক্ষা তখন!

পুরো সিরিজে দুর্বার ব্যাট করা লিটন শেষ ম্যাচেও শুরু পেলেন তার মতো। রানের তাড়া ছিল না। তেড়েফুঁড়ে মারার প্রয়োজনও বোধ করেননি। নিজের সহজাত সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে বের করেছেন বাউন্ডারি।

সঙ্গী নাঈম সিঙ্গেল বের করতে কিছুটা ধুঁকলেও জিম্বাবুয়ের সাদামাটা বোলিং আর সহজ রান তাড়ায় তা-ও সমস্যার কারণ হয়নি।

এক পর্যায়ে তো মিলছিল দশ উইকেটের জয়ের আভাসও। তবে একাদশ ওভারে গিয়ে ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। ৩৪ বলে ৩৩ করে ক্রিস্টোফার এমপোফুর বলে পুল করে মিডউইকেট ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাঈম। দল ততক্ষণে ৭৭ রানে চলে যাওয়ায় ম্যাচের গতিপথে খুব একটা নড়চড় হয়নি।

লিটন ৩৫ বলে ফিফটি তুলে আর আউট হননি। দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ৪৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে শেষ করে দেন খেলা।

এর আগের সময়টাতে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে সংগ্রামরত জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানদের দেখিয়েছে বড্ড হতশ্রী। মোস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন চেপে রাখলেন, তুললেন উইকেটও। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ডেথ বোলিংয়ে থাকলেন ধারালো। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট আনলেন স্পিনাররা। অভিষিক্ত হাসান মাহমুদও খারাপ করেননি।

বাংলাদেশের বোলারদের পাল্টা জবাব দিয়ে নড়েচড়ে ছোটার সুযোগ পেল না জিম্বাবুয়ে। এদিন টস হেরে আগে ব্যাটিং পেয়েও লাভ হয়নি। কাজে লাগেনি পুরো সিরিজে ব্যর্থ ব্রেন্ডন টেইলরের জ্বলে ওঠাও।

অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের ৪৮ বলে অপরাজিত ৫৯ রান যেন বাকিদের মাঝে বিসদৃশ। ক্রেইগ আরভিন করেছেন ২৯। এ ছাড়া টিনাশে কামুনহুকামুই ১০ আর সিকান্দার রাজা ১২। বাকি সবাই তো দুই অঙ্কেও যেতে পারলেন না।

প্রথম উইকেট এনেছিলেন আল-আমিন। দ্বিতীয় উইকেটে আরভিনের সঙ্গে জুটিতে ফিফটি তুলে আশা জাগাচ্ছিলেন টেইলর। থিতু হতে সময় নেওয়া আরভিন যখনই মারতে যাবেন, তখনই কুপোকাত। আফিফ হোসেনের বলে ৩৩ বলে ২৯ করে সহজ ক্যাচ তুলে দিলে ভাঙে তাদের ৫৭ রানের জুটি।

এরপর আসেনি আর উল্লেখযোগ্য কোনো জুটি। টেইলর একা লড়ে যা রান আনার এনেছেন। বাকিদের যাওয়া-আসার মিছিলের সঙ্গে মন্থর রান রেট ভীষণ চাপ হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। শেষ পর্যন্ত যা রান ওঠে বোর্ডে, তাতে ম্যাচের আয়ু হতে পারেনি পূর্ণ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১১৯/৭ (কামুনহুকামুই ১০, টেইলর ৫৯*, আরভিন ২৯, উইলিয়ামস ৩, রাজা ১২, মুটুমবামি ১, মুটমবোডজি ৩, মাধেভেরে ০, মুম্বা ১*; মোস্তাফিজ ২/২৫, সাইফউদ্দিন ১/৩০, আল-আমিন ২/২২, হাসান ০/২৫, মেহেদি ১/১৪, আফিফ ১/২)।

বাংলাদেশ: ১৫.৫ ওভারে ১২০/১ (লিটন ৬০*, নাঈম ৩৩, সৌম্য ২০*; মাধেভেরে ০/২০, এমপোফু ১/২৭, মুম্বা ০/২৬, শুমা ০/১০, উইলিয়ামস ০/১৬, সিকান্দার ০/১৮)।

ফল: বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: লিটন দাস।

ম্যান অব দ্য সিরিজ: লিটন দাস।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago