পৃথিবীর সংকট, করোনা হুজুর ও গোমূত্র
একের পর এক সীমান্ত বন্ধ হচ্ছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হচ্ছে, দেশি-বিদেশি কনফারেন্স, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম বন্ধ হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতির গ্রাফ ক্রমাগত নিচের দিকে নামছে। বিশ্ব মিডিয়া একই ইস্যুতে সংবাদ করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। যত দিন গড়াচ্ছে, তত দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। দুর্দান্ত প্রতাপশালী আমেরিকা আর দুর্বল দক্ষিণ সুদান সবাই এক ভয়ে একই রকম ভীত।
করোনা ভাইরাস। এর আয়তন বা আকার বলা হচ্ছে ২৭ থেকে ৩৪ কিলোবেস— অত্যন্ত ক্ষুদ্র যা মাইক্রোস্কোপ ছাড়া দেখা অসম্ভব। কিন্তু এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাস বিশ্বকে যে বিপদে ফেলেছে তা নজিরবিহীন। রাষ্ট্র প্রধান থেকে শুরু করে আমজনতা, বিজ্ঞানী থেকে চিকিৎসক সবাই আতঙ্কিত। সবাই চেষ্টা করছেন বিপদ ঠেকাতে। কিন্তু বিপদ কমার কোনো লক্ষণ এখনো কারো কাছে দৃশ্যমান নয়।
সারা বিশ্ব কাঁপছে করোনার অজানা আতঙ্কে। কতোটা সর্বগ্রাসী হবে, কতোটা প্রাণসংহারী হয়ে থামবে এ দৈত্য?
বিশ্ব এতোটা সংকটে শেষ কবে পড়েছিল তা জানা নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোধ করি বিশ্ব এতোটা টালমাটাল ছিল না। এক করোনা যেভাবে সারা বিশ্বকে এক কাতারে নামিয়ে আনলো, তা এর আগে অন্য কোনো কিছু পারেনি।
করোনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো মানবজাতির আসলে সম্মিলিতভাবে কী মোকাবেলা করা দরকার। কোন কাজে নিয়োজিত হওয়া দরকার। কিন্তু সংকটের এই মুহূর্তেও কি আমরা সেটি অনুধাবন করতে পারছি?
বিশ্বের এই সংকটে যখন দেখি লালসালুর মজিদেরা বীর বিক্রমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে আর ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে তখন সত্যিই খুব হতাশ লাগে। করোনা হুজুর আর গোমূত্র যখন করোনা মুক্তি থিওরি নিয়ে হাজির হয় তখন এই ভূখণ্ডে আশার আলো দেখার কি সত্যিই কোনো জায়গা আছে?
Comments