আটকের দুই ঘণ্টা পর পুলিশি হেফাজতে চুয়াডাঙ্গা ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু

রংপুরে আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী নিহত
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জাহিদ হাসানের পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে আটক করে জেলার দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের একটি দল। এর কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হয়। নিহত ছাত্রলীগ নেতা জাহিদের পরিবারের অভিযোগ আটকের পর পুলিশ সদস্যরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তবে পুলিশের দাবি ফেনসিডিলসহ আটকের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জাহিদের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত জাহিদ হাসান দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জাহিদ হাসানসহ তার বেশ কয়েকজন সহযোগী শনিবার সন্ধ্যায় জয়রামপুর রেল স্টেশনের কাছে বসে ছিল। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের একটি দল সেখান থেকে জাহিদ হাসান ও তার সহযোগী হাবিবুরকে দুই বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে। আটকের পর তাদেরকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। এর ঘণ্টা খানেক পর ছাত্রলীগ নেতা জাহিদের মৃত্যু হয়।

নিহত জাহিদ হাসানের চাচা পেয়ার আলীর অভিযোগ, আটকের পর প্রকাশ্যে তাদেরকে পেটাতে থাকে পুলিশ। এমনকী, গাড়িতে তুলে নিয়েও পেটানো হয় জাহিদকে। পুলিশের পিটুনিতেই জাহিদের মৃত্যুর অভিযোগ করেন তিনি।

নিহতের স্ত্রী লিপি খাতুন খাতুনের অভিযোগ রাজনীতির প্রতিপক্ষরাই পুলিশকে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের শাস্তিরও দাবি জানান তিনি।

দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক নিহত জাহিদ হাসানের পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘দুই বোতল ফেনসিডিলসহ জাহিদ ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়। আটকের পর বুকে ব্যথা অনুভব করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।’

হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক নিহতের পরিবারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘জাহিদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।’

ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসানের মৃত্যুর খবরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ছুটে যান আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা জাহিদের মৃত্যুতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাসপাতাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ও বর্তমান সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক নিহত জাহিদের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

2h ago