স্বাভাবিক হয়ে আসছে চীন

চলতি বছরের শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে চীন। প্রায় দুই মাস ধরে চলমান অবরুদ্ধ জীবন, কোয়ারেন্টিন ও ভ্রমণ বিধিনিষেধের পরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে দেশটি।
স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে চীন। ছবি: এএফপি

চলতি বছরের শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে চীন। প্রায় দুই মাস ধরে চলমান অবরুদ্ধ জীবন, কোয়ারেন্টিন ও ভ্রমণ বিধিনিষেধের পরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে দেশটি। 

চীনের শ্রমিকরা কাজে ফিরতে শুরু করেছেন। চিকিৎসকরা এখন অনেকটা শঙ্কামুক্ত। কারণ, দেশটিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিমাণ অনেক কমেছে। স্কুল, কারখানা, পাবলিক প্লেস ও পর্যটন স্থানগুলো আবারও খুলতে শুরু করেছে।

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ কিংহাই। সোমবার এখানের ১৪৪টি স্কুল আবার চালু হয়েছে। এছাড়াও, ইউনান, সিচুয়ান এবং গুইঝো প্রদেশের পর্যটন স্থানগুলোর কার্যক্রমও এ সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে।

ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায় ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল উহানের অনেকেই ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। এসব বাসিন্দা কয়েক সপ্তাহ ধরে অন্য জায়গায় আটকে ছিলেন। তাদের একজন হু হাইজিয়ান। তিনি গত বুধবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশ থেকে দীর্ঘপথ গাড়ি চালিয়ে ঘরে ফিরেছেন।

গুয়াংজুর অভিবাসী শ্রমিক ওয়াং ফাজি। ২৬ বছর ধরে নিজের গ্রাম গুইঝো ছেড়ে গুয়াংজুতে কাজ করছেন এই নির্মাণ শ্রমিক। বছরে একবারের জন্য নিজগ্রামে আসেন নববর্ষ উদযাপনে। চলতি বছরে করোনভাইরাস মহামারীর কারণে ওয়াং কাজ করতে পারেননি। তাই আয় না করেই ঘরে বসে থাকতে হয়েছে তাকে। তবুও, করোনাভাইরাসের দ্রুত নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রশংসা করেছেন ওয়াং।

বেইজিংয়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্লিনারের কাজ করছেন ৫১ বছর বয়সী মেং ইউইকুই। তিনি বলেন, তার নিজের শহর হুবেই অবরুদ্ধ থাকা সত্ত্বেও তার নিয়োগকর্তা পারিশ্রমিক দেওয়া অব্যহত রেখেছিল। যদিও তিনি নিজের শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। তিনি অপেক্ষায় ছিলেন নিষেধাজ্ঞাগুলি সহজ করার। যাতে মানুষ আবার কাজে ফিরে যেতে পারে।

ওয়াং এবং মেং এর মতো ১৭৩ মিলিয়ন শ্রমিক গ্রাম থেকে এসে চীনের বড় বড় শহরে কাজ করেন। তবে হুবেইসহ কিছু শহরের চলমান নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও কিছু প্রতিষ্ঠান আবারও কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এজন্য শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে স্থানীয় সরকার চার্টার বাস, ট্রেন এবং বিমান চালনা করছে।

চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী গত ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের কারখানাগুলো বন্ধ হতে শুরু করে। ফলে, ফেব্রুয়ারিতে উত্পাদন সূচক রেকর্ড সর্বনিম্ন নেমে হয়েছে ৩৫.৭। যা জানুয়ারির তুলনায় ১৪.৩ পয়েন্ট কম।

কিন্তু, চীনের জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে বলে এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে আশাবাদী সরকার।

গত মঙ্গলবার, চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং মহামারির পরে প্রথমবারের মতো হুবেইয়ের রাজধানী উহানে পরিদর্শনে যান। তার উহানে যাওয়াকে মহামারির বিরুদ্ধে চীনের জিতে যাওয়ার সংকেত হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশটির কিছু গণমাধ্যম।

গত বুধবার হুবেই সরকার একটি নোটিশ জারি করেছে। ওই নোটিশে সব প্রতিষ্ঠানকে আবারও কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। সেখানের বাসিন্দাদের হুবেই ছাড়ার নিষেধাজ্ঞা বহাল আছে। কিন্তু, হুবেই প্রদেশের অঞ্চলগুলোকে উচ্চ, মধ্য এবং নিম্ন ঝুঁকি এই তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।  

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago