করোনা সন্দেহভাজনদের পালানো বন্ধে ভারতে ‘সিল’ ও শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত

গোটা বিশ্ব যেখানে কার্যত ‘অবরুদ্ধ’ থেকেও নতুন করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতে করোনার লক্ষণযুক্ত রোগীদের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যাওয়া ও স্বাভাবিক চলাফেরার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
Qarantine Seal-2.jpg
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের হাতে অমোচনীয় কালি দিয়ে সিল মেরে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

গোটা বিশ্ব যেখানে কার্যত ‘অবরুদ্ধ’ থেকেও নতুন করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতে করোনার লক্ষণযুক্ত রোগীদের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যাওয়া ও স্বাভাবিক চলাফেরার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

এমতাবস্থায় যাদের শরীরে করোনার লক্ষণ দেখা দিয়েছে, তাদের আপাতত ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার।

এ ছাড়া ওই ব্যক্তিদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করে রাখতে তাদের বাঁ হাতে একটি বিশেষ ‘সিল’ মেরে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভারতের তৃতীয় করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। সরকারি হিসাবে, দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১২৫ জন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই রয়েছেন সর্বোচ্চ ৩৯ জন।

গত কয়েকদিনে রাজ্যের প্রায় সাত জন করোনা লক্ষণ যুক্ত রোগী চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে পালিয়ে গেছেন বলে জানানো হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, ‘কেউ যদি কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হন, সেটি তার অপরাধ নয়। তাদের অবশ্যই যথাযথ চিকিৎসা এবং মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। রাজ্যের জনগণের স্বার্থেই মহামারি নিরোধক আইন তৈরি করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসনকে অবশ্যই এই রোগটি সম্পর্কে সচেতন থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপ বলেছেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কোনো ব্যক্তিকে তার নিজের বাড়িতে কোয়ারেন্টিন অবস্থায় থাকার পরামর্শ দেওয়া হলেও, তারা তা অমান্য করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অন্যান্য মানুষজনের সঙ্গে মিশছেন। এর ফলে আরও বেশি করে করোনা সংক্রমিত হচ্ছে।’

‘তাই ভোট দেওয়ার পর ভোটারদের হাতে যে অমোচনীয় কালি লাগানো হয়, সেই কালি দিয়ে করোনা লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদের বাঁ হাতে একটি সিল মেরে দেওয়া হবে। যাতে সহজেই তাকে চিহ্নিত করা যায়’, বলেন তিনি।

একইসঙ্গে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, কেউ করোনা সংক্রমণের লক্ষণ শরীরে থাকা সত্ত্বেও ঘর থেকে বেরিয়ে সাধারণের সঙ্গে মেলামেশা করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকা ব্যক্তিরা স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আইন প্রয়োগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না বলেও সেসব প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারি নির্দেশনা না মানায় গতকাল মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা এক ইরাক প্রবাসীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর আগের দিন সন্ধ্যায় একই উপজেলার ব্রাহ্মণবাড়ি গ্রামে অপর সৌদি প্রবাসীকেও জরিমানা করা হয়।

এর আগে, গত ১৫ মার্চ বিকালে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাহরাইন ফেরত ৪০ বছর বয়সী সন্দেহভাজন এক করোনা আক্রান্ত রোগী পালিয়ে যান বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন:

সন্দেহভাজন করোনা রোগী হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন

আইন প্রয়োগ করেও হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা যাচ্ছে না

নির্দেশনা না মানায় আরও এক প্রবাসীকে জরিমানা

নির্বিঘ্নে চলাফেরা করছেন ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ থাকা অনেক বিদেশফেরত

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

11m ago