শীর্ষ খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জনসমাগম ঘটিয়ে সিভিল সার্জনের মেয়ের বিয়ে

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার যখন গণজমায়েত এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দিয়েছে, এই সময়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে তার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করেছেন।
Brahmanbaria_pic-1.jpg
বিয়ে উপলক্ষে সিভিল সার্জনের বাসভবনের ভেতরে ফুল দিয়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। ছবি: স্টার

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার যখন গণজমায়েত এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দিয়েছে, এই সময়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে তার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান করেছেন।

আজ শুক্রবার শহরের ফারুকী পার্ক সংলগ্ন সরকারি কর্মকর্তাদের ডরমিটরিতে থাকা সিভিল সার্জনের বাসভবনে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়।

বিয়ে উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত চিকিৎসকসহ তিন শতাধিক অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে সিভিল সার্জনের দাবি, তিনি ঘরোয়া আয়োজন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চাপুইর গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন মোল্লার ছেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মঈনুল হোসেনের সঙ্গে সিভিল সার্জন শাহ আলমের মেয়ে দন্ত চিকিৎসক শাননিন আলম মমো’র বিয়ের আয়োজন করা হয়। আজ জুমার নামাজের পর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়া বিয়ে বাড়িতে অন্য কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফায়েজুর রহমান, ফৌজিয়া আক্তার, সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আজহারুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন ক্লিনিকের দন্ত চিকিৎসকদের একটি দল, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা যোগ দিয়েছেন।

বাসভবনের বাইরে সাংবাদিকদের আনাগোনা টের পেয়ে বিকেল পৌনে তিনটার দিকে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে বেলা পৌনে ১২টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রধান ফটকের ভেতরে ফুল দিয়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আর ভবনের সামনে তৈরি করা হয়েছে প্যান্ডেল। ভেতরে এক কোণে ১০টি বড় পাত্রে চলছিল রান্নার কাজ।

bbbbb.jpg
ভেতরে এক কোণে ১০টি বড় পাত্রে চলছিল রান্নার কাজ। ছবি: স্টার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরামের যুগ্ম-সম্পাদক হাবিবুর রহমান পারভেজ বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসমাগম এড়াতে সরকারের নির্দেশনা না মেনে এভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের জেলা পর্যায়ের একজন সর্বোচ্চ কর্মকর্তার নিজের মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা ঠিক হয়নি। এটা করে তিনি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন শাহ আলম বলেন, ‘এক মাস আগেই আমার মেয়ের বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার মেয়ের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হয়। এখন বাবা হয়ে কীভাবে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দিই। তাই অল্প পরিসরে বিয়ের আয়োজন করেছি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জেনেছি। করোনাভাইরাসের জন্য জনসমাগম এড়িয়ে চলতে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। কেউই জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়।’

প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপারের কাছে এক ইমেইল বার্তা পাঠিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চলতি মার্চ মাসের ১ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানযোগে নয় হাজার ২০৮ জন প্রবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসেছেন। প্রবাসীদের আগমনের তারিখ থেকে পরবর্তী ১৪ দিন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার জন্য জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

When the system develops rust, police can see even dead men running

The dead are thought to be free from mortal matters. But are they? Consider Amin Uddin Mollah. The Gazipur man has long since died, on January 25, 2021, to be precise, and yet he “took part” in attacking police personnel with a bomb on the night of October 28, 2023

1h ago