সরকারের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

Dr Zafrullah
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ পরীক্ষার সহজ ও স্বল্পমূল্যের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। কিট উৎপাদনের কাঁচামাল ব্রিটেন থেকে আনার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। কিট উৎপাদনের সর্বশেষ প্রস্তুতি বিষয়ে আজ সোমবার দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

করোনা পরীক্ষার কিট তৈরির প্রস্তুতি কোন পর্যায়ে?

করোনা পরীক্ষার কিট তৈরির কাঁচামাল ব্রিটেন থেকে আমদানির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, আগামী বুধবারের মধ্যে তা চলে আসবে।

দেশে আসার পর কাঁচামাল দ্রুত খালাস করতে হবে। সরকারি নীতি অনুযায়ী শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবো। তবে, সেই সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র এখনো হাতে আসেনি। কাগজ সংক্রান্ত জটিলতায় কাঁচামাল খালাস করতে দেরি হলে কিট উৎপাদনেও দেরি হবে। এখন যত দ্রুত সম্ভব কাঁচামাল খালাসের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

কাঁচামাল পেলেই উৎপাদনে যেতে পারবেন?

আমাদের কাছে কিট তৈরির যে যন্ত্রপাতি আছে তা দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ১০ হাজার কিট তৈরি করে দিতে পারব। তৈরি করেই আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে দেবো। তারা পরীক্ষা করে দেখবে ঠিকমতো কাজ করে কি না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক বলেছিলেন এ ধরনের কিট ভুল তথ্য দেয়।

তিনি অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলেছেন। তার কথায় আমি অবাক হয়েছি। পরীক্ষা ছাড়া এমন কথা বলা মোটেই উচিত না। গবেষকরা গবেষণা করে উদ্ভাবন করলেন, আর আপনি পরীক্ষা না করেই বলে দিলেন ঠিকমতো কাজ করে না? দেশীয় গবেষকদের ওপর এত অনাস্থা কেন? ডা. বিজন কুমার শীল যে সার্স ভাইরাস শনাক্তের কিট উদ্ভাবন করেছিলেন, চীন সেটা কিনে নিয়ে সফলভাবে প্রয়োগ করেছে। এসব তথ্য তো সবার জানা থাকার কথা।

কিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কি উৎপাদনে যেতে পারবেন?

আমাদের এখন যে যন্ত্রপাতি আছে তা দিয়ে আমরা মাসে ১০ হাজার কিট সরবরাহ করতে পারব। কিন্তু, আমরা মাসে পাঁচ লাখ বা তারও বেশি কিট তৈরি করার পরিকল্পনা করছি। প্ল্যান্ট বড় করার পরিকল্পনা করছি। এজন্যে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে ২০ কোটি টাকা দরকার। আমাদের সম্পদ আছে, নগদ টাকা নেই। ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার চেষ্টা করছি। এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

আমাদের সঙ্গে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ান সরকার যোগাযোগ করছে। আমরা যত দিতে পারব, তারা তত পরিমাণই কিনে নিবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা কিট রপ্তানি করতে চাই।

যতদূর জানি, ইউএসএআইডি আপনাদের সহায়তা করতে চেয়েছে।

ইউএসএআইডি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা কী ধরনের সহায়তা করবে তা ঠিক হয়নি। তারা ডোনেট করতে পারে। আমাদের যন্ত্রপাতি কিনে দিতে পারে। অনুদান দিতে পারে। আইএফসির ৩ শতাংশ সুদে যে ঋণের ব্যবস্থা আছে, তা দিতে পারে। ২০ কোটি টাকার জন্যে ১০০ কোটি টাকার সম্পদ বন্ধক রাখতে পারি। ইউএসএআইডি সহায়তা করতে চাইলে, অবশ্যই নেব। শর্ত একটি, আমাদের গবেষণায় কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

সরকারের কাছে কি চেয়েছেন? মাত্র ২০ কোটি টাকা তো সরকারই দিতে পারে।

কীভাবে চাইবো, কার কাছে চাইবো? সরকারের কারো সঙ্গে তো আমাদের আলোচনা হয়নি। আলোচনা হলে তো বুঝিয়ে বলতে পারতাম, টাকার কথা বলতে পারতাম। সরকার সার্ক তহবিলে ১৫ লাখ ডলার দিচ্ছে। এই পরিমাণ টাকা আমাদের দিলে তো বড়ভাবে উৎপাদনে চলে যেতে পারি। আমাদের কিট দিয়ে তো সার্কের সব দেশই উপকৃত হতে পারবে।

কিটের সংবাদ সামনে আসার পর সরকারের কারো সঙ্গে আপনাদের কোনো আলোচনা হয়নি?

না, সরকারের কোনো পর্যায় থেকে কেউ কোনো যোগাযোগ করেনি।

কিন্তু জানা যাচ্ছিল যে, কিট উদ্ভাবক গবেষক ড. বিজন কুমার শীলকে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে দেখা করার জন্যে ডেকেছেন।

না, আনুষ্ঠানিকভাবে এমন কোনো আমন্ত্রণ আমাদের গবেষক দল পায়নি। ড. বিজন কুমার শীলসহ আরও তিনজন গবেষক আছেন দলে। তারা হলেন— ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাঈদ জমিরউদ্দিন ও ড. ফিরোজ আহমেদ। আমন্ত্রণ পেলে তো সবারই পাওয়ার কথা। ড. বিজন কুমার শীলসহ কেউই আনুষ্ঠানিক কোনো আমন্ত্রণ পাননি।

আরও পড়ুন:

ড. বিজনের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ৩৫০ টাকায় ১৫ মিনিটে করোনা শনাক্ত সম্ভব

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

3h ago