নিরুপায় মানুষদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দিচ্ছেন লিটন-সঞ্চিতা

করোনাভাইরাসের কারণে গোটা দেশ প্রায় ‘লকডাউন’ হতে চলেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে লম্বা সময়ের জন্য বন্ধ থাকবে সরকারি, বেসরকারি সব অফিস। মানুষের চলাচল থাকবে সীমিত। এই পরিস্থিতি উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তরা সামলে নিলেও সমস্যায় পড়তে পারেন দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের কষ্ট বুঝেছেন বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার লিটন দাস ও তার স্ত্রী সঞ্চিতা দাস।
চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ ও মশলা- নিত্য প্রয়োজনীয় এসব পণ্যভর্তি পলিথিনের অনেকগুলো প্যাকেটের স্তূপের একটি ছবি বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দিয়েছেন সঞ্চিতা। তাতে তিনি লিখেছেন, বাড়িতে আবদ্ধ থাকার এই সময়েও খেটে খাওয়া মানুষদের কথা ভেবে ঝুঁকি নিয়ে এই উদ্যোগ নিয়েছেন তারা, ‘এর বেশি কিছু করার সামর্থ্য নেই এই মুহূর্তে। আপাতত আমাদের কেউ সাহায্য করার নেই (এসব প্যাকেট তৈরি করতে)। শেষ মুহূর্তে যা পেরেছি, আমরা কিনেছি। কিছুটা ঝুঁকি ছিল। কারণ এখন হোম কোয়ারেন্টিনের সময়। আপনার ছোট্ট সাহায্য হয়তো বাকিদের জন্য আশীর্বাদ হবে।’
সঞ্চিতা এরপর আলাদাভাবে ধন্যবাদ জানান লিটনকে, ‘লিটন দাস এই সংকটে তোমার সাহায্য কখনো ভুলব না, ধন্যবাদ।’
ডানহাতি ব্যাটসম্যান লিটন জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সম্মিলিত একটা তহবিলেও আর্থিক সাহায্য করেছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশের ২৭ ক্রিকেটার মিলে নিজেদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক টাকা জমা করেছেন। বিসিবির চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটার হিসেবে লিটন মাসে পান ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তহবিলে তিনি তাই দিচ্ছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা।
এদিন ফেসবুকে নিজের স্বীকৃত পেজে পোস্ট করে সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লিটন, ‘আপনারা সবাই জানেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চারদিকে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯ রোগ। এই রোগ প্রতিরোধে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে যার যার জায়গা থেকে।’
‘সেটির অংশ হিসেবে আমরা ক্রিকেটাররা একটা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, যেটি হয়তো অনুপ্রাণিত করতে পারে আপনাদেরও। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থাকা ও গত তিন মাসে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা আমরা মোট ২৭ ক্রিকেটার এক মাসের বেতনের ৫০ শতাংশ দিয়ে একটা তহবিল গঠন করেছি। এই তহবিল ব্যয় হবে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও সাধারণ মানুষের জন্য, যাদের গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় জীবন চালিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়।’
‘আমাদের তহবিলে জমা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো। কর কেটে থাকবে ২৬ লাখ টাকা। করোনার বিরুদ্ধে জিততে আমাদের এই উদ্যোগ হয়তো যথেষ্ট নয়। কিন্তু যাদের সামর্থ্য আছে সবাই যদি একসঙ্গে এগিয়ে আসেন কিংবা দশজনও যদি এগিয়ে আসেন, এই লড়াইয়ে আমরা অনেক এগিয়ে যাব।’
Comments