চীন-যুক্তরাষ্ট্র পারষ্পরিক দোষারোপ, ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন বেইজিংয়ের
করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকেই একে অপরকে দুষছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। শুরু থেকেই নতুন করোনাভাইরাসকে ‘চীনা ভাইরাস’ হিসেবে সম্বোধন করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে বলেন, ‘উহান ভাইরাস’।
এ ধরনের মন্তব্যকে ‘বর্ণবাদী’ ও ‘জাতিগত বৈষম্য’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে প্রবল আপত্তি জানায় চীন।
মার্কিন নেতারা চীনের বিরুদ্ধে ভাইরাস নিয়ে তথ্য গোপনের অভিযোগও জানিয়েছে। সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারিতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পারষ্পরিক দোষারোপের মধ্যেই ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে চীনের।
চীনের বার্তাসংস্থা শিনহুয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ।
শি’র বরাত দিয়ে চীনের বার্তাসংস্থা শিনহুয়া জানায়, সীমান্ত কিংবা জাতি নির্বিশেষে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। প্রয়োজনীয় সামগ্রীর জন্য বাণিজ্য যোগাযোগ উন্মুক্ত রেখে চীন ও ব্রিটেনের উচিৎ একসঙ্গে কাজ করা। গোটা মানবজাতির এখন মানবতার স্বার্থে একত্রিত হওয়া প্রয়োজন। এসময় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি। ভাইরাসটির গতিবিধি সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণার জন্য দুই দেশের এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্ববাজার স্থিতিশীল রাখতে একটি ‘উন্মুক্ত, স্থিতিশীল ও নিরাপদ’ সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রস্তাব জানান তিনি। জনগণের জীবিকা ও বিশ্ব অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির স্বার্থে অর্থনৈতিক নীতিমালায় সমন্বয় প্রয়োজন বলেন তিনি।
এদিকে, গত শনিবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাখোঁ এবং জার্মানি, স্পেন ও সার্বিয়ার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পৃথকভাবে ফোনে আলাপ করেন প্রেসিডেন্ট শি। সম্প্রতি ইতালি, স্পেন ও সার্বিয়ায় জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ ও বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে চীন।
সোমবার, মাখোঁর সঙ্গে ফোনে আলাপকালে শি বলেন, চীন ও ফ্রান্সের উচিৎ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, জনস্বাস্থ্য ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় যৌথভাবে অংশ নেওয়া। পাশাপাশি, আফ্রিকার দেশগুলোকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা।
শি বলেন, ‘চীন ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তুলে ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের ওপর এমন হুমকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জি টোয়েন্টি ও জাতিসংঘের কাঠামো অনুযায়ী সমন্বয় ও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসা প্রয়োজন।’
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও জনস্বাস্থ্যের ওপর হুমকি বিবেচনায় জরুরি জি টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন আহ্বানের ব্যাপারে একমত হয়েছেন মাখোঁ ও শি।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি জরুরি সম্মেলন আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট অফিস। সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে যুক্ত করার পাশাপাশি যে সমস্ত দেশ টিকা আবিষ্কারের জন্য কাজ করছে তাদের সবার মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে জানান ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাখোঁ।
Comments